‘তুমি’ বলে ডাকায় কোরআনের হাফেজসহ ৮ জনকে কুপিয়ে জখম
মাদারীপুর সদর উপজেলায় ‘তুমি’ বলে ডাকায় কোরআনের হাফেজসহ আটজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় খলিল সরদার ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
রোববার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার খাগদি ফুকোচিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আহতরা হলেন, ফেরদৌস তালুকদার (১৫), মাসুদ তালুকদার (২২), ওহিদ তালুকদার (৪৫), হৃদয় বেপারী (২৫), বাসার বিশ্বাস (৩৫), সরোবর শেখ (৩৩)। এদিকে মাসুদ তালুকদারের অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও ভুক্তভোগী পরিবার থেকে থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পরে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি খলিল সরদারে ছোট ছেলে জীবনকে হাফেজ ফেরদৌস তালুকদার তুমি বলায় তাকে মারধর করতে যায় খলিলের ছেলে ও তার লোকজনেরা। পরে স্থানীয় লোকজন দেখতে পেলে তারা পালিয়ে যায়। সেই ক্রোধে রোববার দুপুরে বাড়ির পাশে ডেকে নিয়ে খলিল সরদারের ছেলে ও লোকজনেরা মিলে কোরআনের হাফেজ ফেরদৌস তালুকদারকে মারতে থাকে। পরে তার চিৎকার শুনে ফেরদৌসের বড় ভাই মাসুদ তালুকদারসহ তার পরিবারের লোকজন তাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এদিকে মাসুদ তালুকদারের অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগীর মা রিনা বেগম বলেন, ইমন সরদার খলিল সরদারের ছেলে। ইমন সরদার, রাজিব সরদার, রুমন সরদার, জীবন সরদার ও তাদের ২০ থেকে ৩০ জন লোক মিলে আমার দুই ছেলে স্বামীসহ যারা তাদেরকে বাঁচাতে এসেছে তাদেরকেও মারধর করে জখম করে। আমার ছোট ছেলে ফেরদৌস তালুকদার কোরআনের হাফেজ সে ইমামতি করে। তাকে এমনভাবে কুপিয়েছে দেখলে যেকেউ বেহুঁশ হয়ে যাবে। এছাড়া আমার বড় ছেলেকে এমনভাবে মারছে তাকে এখন ঢাকা নেওয়া লাগছে। আমি তাদের বিচার চাই।
কোরআনের হাফেজের বাবা ওহিদ তালুকদার বলেন, আমার ছেলে তুমি বলার অপরাধে আমার ছেলেদেরকে মারধর করেছে। তারা এলাকায় সন্ত্রাসবাহিনী করে তাদের কথা না শুনলে তারা সবাইকে এভাবে মারে। তাদের যন্ত্রণায় আমরা এখন থাকতে পারি না আমার ছেলেদেরকে কোপানোর পরও এক ঘণ্টা তারা আমাদেরকে ঘর বন্দী করে রাখছে। কোনো মতে আমরা সেখান থেকে ছুটে হাসপাতালে আসি। এখন আমরা সরকার এবং প্রশাসনের কাছে এর কঠোর বিচার চাই।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার শাওরিন আফরোজ বলেন, বিকেলে খাগদি এলাকা থেকে কিছু রোগী এসেছে তাদের মধ্যে মাসুদ তালুকদারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত খলিল সরদার বলেন, আমরা তাদেরকে মারিনি। তারা আমাদেরকে মারছে।
মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাকিব হাসান/আরকে