বিদিশা সিদ্দিক

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলের কাউকে মানেন না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। 

তিনি বলেছেন, বর্তমান জাতীয় পার্টির অবস্থা বিধ্বস্ত। মহান আল্লাহ জানেন, কীভাবে জাতীয় পার্টি ঠিক হবে। এখন দলের দায়িত্বে যিনি আছেন; তিনি নড়তে-চড়তে পারেন না। অঙ্গ-সংগঠনের অবস্থাও ভঙ্গুর হয়ে গেছে। দলের কেউ জেলা-উপজেলায় যায় না। জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠাতার যে স্বপ্ন ছিল, তা ধ্বংসের পথে। এর আগেও বলেছিলাম, জাপা লাইফ সাপোর্টে। আজ বলছি, দলের অবস্থা বিধ্বস্ত।

সোমবার (২২ মার্চ) বিকেলে রংপুরের পল্লীনিবাসে এইচএম এরশাদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এরশাদের জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী জাতীয় পার্টির নেতারা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন দাবি করে বিদিশা বলেন, এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে যেভাবে অনুষ্ঠান করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি। যারা এসব দায়িত্বে ছিলেন; তারা দায়সারাভাবে দিবসটি পালন করেছেন। অথচ আমরা মাসব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় পার্টিকে নতুন করে গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছি। তৃণমূল থেকে মাঠে নেমে কাজ করছি। এখানে ছেলে এরিককে নিয়ে কবর জিয়ারত করতে এসেছি। কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আসিনি।

রংপুরের পল্লীনিবাসে এইচএম এরশাদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও জিয়ারত করেন বিদিশা সিদ্দিক

বিদিশা এরশাদ অভিযোগ করেন, জিএম কাদের কাউকে মূল্যায়ন করছেন না। কোনো জোটকে প্রয়োজন মনে করেন না। নিজে যা ভাবেন; তাই করেন। দলের কাউকে মানেন না তিনি। 

বিদিশা বলেন, রংপুুুরের মানুষ ও তৃণমূল চাইলে আমি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। আমার নেতৃত্ব যদি সাধারণ মানুষ মেনে নেন; তাহলে আমি প্রস্তুত। আমরা জাতীয় পার্টিকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চাই। সামনের দিনে দলে পরিবর্তন আসছে; তা দেখার জন্য রংপুরবাসীকে অপেক্ষায় থাকতে বলেন বিদিশা।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, রংপুুুরে পল্লীবন্ধুর মাজার তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বুয়েটের প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের।  এখানে মসজিদ ও মাদরাসা তৈরি হবে। এখানকার হাসপাতালটি আরও বেশি উন্নত হবে। খুব দ্রুত সময়েই এসব তৈরির কাজ শুরু হবে।

সম্মিলিত ৫৮ দলীয় জাতীয় জোট ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এরশাদের ৯২তম জন্মদিনের কেক কাটেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এরশাদপুত্র শাহতা জারাব এরিক এরশাদ, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ, মহাসচিব আক্তার হোসেন, ট্রাস্টের পরিচালক ও উপদেষ্টা কাজী রুবায়েত হাসান ও জাপা নেতা ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে রংপুরে পল্লীনিবাসে আসেন বিদিশা এরশাদ। এ সময় তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির কোনো কেন্দ্রীয় নেতা এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএম