নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুই কৃষকের এক বিঘা জমির বোরো ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন চার সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার (২৭এপ্রিল) সকালে সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের কৃষক মহেন্দ্র চন্দ্র ও গোলাপ মিয়ার জমির পাকা বোরো ধান কাটতে যান ওই চার সাংবাদিক। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা কাজ করে দুই কৃষকের পাকা ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেন তারা।

জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির শঙ্কায় জমির পাকা ধান তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন কৃষক মহেন্দ্র ও গোলাপ মিয়া। বিষয়টি জানতে পেরে তাদের জমির বোরো ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেন এশিয়ান টেলিভিশনের  নীলফামারী প্রতিনিধি মাইনুল হক, সৈয়দপুর প্রতিনিধি ওবায়দুল ইসলাম, আমার সংবাদের সৈয়দপুর প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ অলিউর রহমান রতন ও দৈনিক সময়ের কণ্ঠের প্রতিনিধি রাজু আহমেদ।

কৃষক গোলাপ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকদিন ধরে ধানগুলা কাটার জন্য মানুষ খুঁজতেছি। আগে দিন হাজিরা ৩০০ টাকা দিয়ে লোক পাওয়া যাইতো এখন সবাই ৫০০ করে টাকা দাবি করছে। আমি এতো টাকা দিয়ে লোক নিয়ে কীভাবে কাটবো সেই চিন্তায় ছিলাম। বিষয়টি কয়েকজন সাংবাদিক শুনে তারা আমার ধান কেটে বাড়িতে এনে দিয়েছেন। আল্লাহ তাদের ভালো করুক।

এদিকে দরিদ্র দুই কৃষকের পাশে এভাবে এগিয়ে আসায় প্রশংসায় ভাসছেন তারা। আগামীতেও সাংবাদিকরা এভাবে অসহায় মানুষের পাশে তারা এমন নির্ভরশীলতার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবেন বলেই তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।

স্থানীয় নেওয়াজ আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সবসময় দেখি সাংবাদিকরা কলমের মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এবার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম দেখছি, সাংবাদিকরা অসহায় কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। এভাবে আমাদের সবাইকে সবার পাশে দাঁড়ানো উচিত।

এশিয়ান টেলিভিশনের নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি মাইনুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে শ্রমিকের মজুরি অনেক বেশি আবার সার বীজ কীটনাশকেরও দাম সব মিলে কৃষক বিপদে আছে। বেশি মজুরিতে শ্রমিক নিয়ে ওই দুই কৃষক তাদের সোনালী স্বপ্ন ঘরে তুলতে পারছিলেন না। তখন আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এই উদ্যোগ গ্রহণ করি। ধান কাটার পর ওই দুই কৃষক খুশি হয়েছেন তাতেই আমাদের আনন্দ। আমরা অতি অসহায় কৃষক খুঁজে খুঁজে আরো ধান কেটে বেব ইনশাআল্লাহ।

শরিফুল ইসলাম/এমএএস