বাবা বাবুল বেপারী টয়লেটে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন ছোট আমগাছের সঙ্গে তার ছেলের মরদেহ ঝুলছে। পরে পুলিশ অর্ধঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চরকুমারিয়া ইউনিয়নের নাজিমউদ্দীন মোল্লা কান্দি গ্রামের বাবুল বেপারীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শাকিল আহমেদ জীবন (১২) সখিপুরের চরকুমারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানা যায়, প্রতিদিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে রাত ৯টায় বাড়ি ফিরে আসে শাকিল। কিন্তু ঘটনার দিন রাত ১০টা পার হয়ে গেলেও সে বাড়ি ফিরে না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়ে তার বাবা-মা। এক পর্যায়ে সবাই তাকে খোঁজাখুঁজি করতে শুরু করে। এমন সময় শাকিলের বাবা গোয়াল ঘরের দিকে শৌচাগারের কাছে একটি ছোট আমগাছের সঙ্গে হাটু ভাঙা অবস্থায় চিকন দড়ি দিয়ে শাকিলের অর্ধঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

নিহতের বাবা বাবুল বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলেকে কে বা কারা মেরে ছোট আমগাছের সঙ্গে ঝুলায়ে রাখছে তা জানি না। অনেক রাত হয়ে গেলেও শাকিলকে না পেয়ে খুঁজতে বের হই। এ সময় টয়লেটে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দেখি আমের চারা গাছের সঙ্গে ছেলের মরদেহ ঝুলছে। পুলিশ এসে শাকিলের মরদেহ নিয়ে গেছে। হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর আমি অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা করব। আমি আমার ছেলের মৃত্যুর কারণ জানতে চাই। এর বিচার চাই।

শাকিলের মা হাছনা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমার বুকের ধন হারায়া গেছে। ঈদে কোনো কিছুই কমতি রাখি নাই ছেলের। আমার ছেলে কেন আত্মহত্যা করবে। আমার ছেলেকে কেউ মেরে গাছের সঙ্গে ঝুলায়া রাখছে। আমারে কে মা কইয়া ডাকব? কারে আমি স্কুলে পাঠামু?’

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন কুমার পোদ্দার ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাকিলের মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার রিপোর্ট দেখে বলা যাবে মৃত্যুর কারণ কী ছিল।

সখিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে আমরা অর্ধঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে। এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি।

আরকে