মধ্যরাতে প্রেমিকাকে বাড়িতে এনে প্রেমিক উধাও
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে মধ্যরাতে প্রেমিকাকে (১৯) বাড়িতে এনে তার সঙ্গে সময় কাটিয়ে উধাও হয়ে গেছেন প্রেমিক আব্দুল মালেক (২০)। এরপর সেই প্রেমিকাকে মারধর করে সোমবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে প্রেমিকের পরিবার। পরবর্তীতে মালেকের প্রতিবেশী হামিদ শেখের বাড়িতে ঠাঁই হয়েছে ওই তরুণীর। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
প্রেমিক মালেক রঘুনাথপুর গ্রামের কাদের শেখের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী। ওই তরুণীও একই কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী তরুণী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মালেকের সঙ্গে আমার প্রায় দীর্ঘ দুই বছরের সম্পর্ক। তার সঙ্গে আমার একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে। সে গতকাল আমাদের বাড়িতে যায় এবং রাত ১টার দিকে আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। আমাকে প্রথমে তার ঘরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এরপর তার পরিবারের লোকজন টের পেলে সে পালিয়ে যায়। তার বাড়ির লোকজন আমাকে মারধর করে। আমাকে মালেকের চাচা শহীদুল মাস্টার সবচেয়ে বেশি মারধর করেছেন। পরবর্তীতে মারধর করতে করতে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে আমার কান্নাকাটিতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে প্রতিবেশী এক চাচা আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে তিনি বলেন, আমাকে মারধর করে বের করে দেওয়ার পরেই হয়তো মালেককেও তার বাড়ির লোকজন মারধর করে বের করে দিয়েছে। এখন হয়তো আত্মগোপনে থাকতে বলেছে। এখন তারা বলছে মালেককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মেয়েটিকে আশ্রয় দেওয়া আব্দুল হামিদ শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ মেয়ে মানুষের কান্নার আওয়াজ ও বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। পরে বাড়ির গেট খুলে এগিয়ে গিয়ে দেখি এই ঘটনা। পরে তাকে নিয়ে এসে আমার বাড়িতে রাখি। মেয়েটিকে তারা মারধর করেছে বলে মেয়েটি আমাদের জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রেমিক মালেকের চাচা শহীদুল মাস্টার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মালেক ওই মেয়েকে নিয়ে এসেছিল এটা সত্য নয়, মেয়ে একাই এসেছিল। মালেক কোথায় আছে আমরা জানি না। এছাড়াও ওই মেয়েকে আমরা কোনো মারধর করিনি ও মালেককেও লুকিয়ে রাখিনি। মেয়েটি মিথ্যা অভিযোগ করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত ৩টার দিকে আমাকে খবর দেওয়া হয়। আমি গিয়ে মেয়ের মুখে ঘটনা শুনি। আমি ও স্থানীয় মাতব্বর আবুল মিস্ত্রী সকালেও গিয়েছিলাম ওখানে। তবে প্রেমিক মালেককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলের পরিবারকে ছেলেকে হাজির করতে বলা হয়েছে। ছেলেকে হাজির করলে বসে একটা সমাধান করে দিতে চেয়েছি। আর ছেলেকে হাজির না করলে এ বিষয়ে আর আমাদের কিছু করার নেই।
স্থানীয় মাতব্বর আবুল মিস্ত্রী বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। বসার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে তাদের বলেছি ছেলের সঙ্গে কথা না বলে কোনো সমাধান দেওয়া সম্ভব না। এছাড়াও একটি মেয়ের সঙ্গে কোনো খারাপ কিছু হবে এটাও মেনে নেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) সুমন কুমার দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও একজন অফিসারকে বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেছি।
শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর