রংপুরের কাউনিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোনা মিয়া (৫৫) নামে আওয়ামী লীগ এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার হারাগাছ খানসামা ইমামগঞ্জ স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সোনা মিয়া উপজেলার হারাগাছের নাজিরদহ এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি হারাগাছ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। 

স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা জানান, সোমবার বিকেলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে উপজেলার ইমামগঞ্জ স্কুলমাঠে আসেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সেখানে সোনা মিয়া ও তার ভাই মুকুল মিয়া বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া শুরু করলে আওয়ামী লীগের আব্দুর রাজ্জাকের লোকজনের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। কারণ মুকুল ও সোনা মিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের নাম নিয়ে স্লোগানে দেননি। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোলের চেষ্টা করে দুই পক্ষের লোকজন। পরে রাতে সোনা মিয়াকে বাজারে একা পেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ও তার বড় ভাই হারাগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদের নেতৃত্বে পেটানো হয়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউনিয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেলে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর রাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। 

নিহতের ভাতিজা আলমগীর হোসেন জানান, বিকেলে বাণিজ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে স্লোগান দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে রাত ৮টার দিকে চাচা সোনা মিয়াকে ইমামগঞ্জ স্কুলের সামনে একা পেয়ে আওয়ামী লীগের আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলে চাচার মৃত্যু হয়।

কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাসির বিল্লাহ বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। এছাড়াও ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর