চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে মো. ফাহাদ (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। রোববার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পৌরসভার রেহাইচর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর দক্ষিণ পাশে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত ফাহাদ ফুলকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ও জেলা শহরের মসজিদপাড়া মহল্লার মনিরুল ইসলামের ছেলে। একই ঘটনায় মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার আশরাফুল ইসলামের ছেলে মো. ইমন (১৭) আহত হয়েছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

নিহতের বন্ধু ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলা শহরের মসজিদপাড়া ও সদর উপজেলার বারোঘরিয়ার দুটি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা ছিল। এরই জেরে রোববার সন্ধ্যার পর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর নিচে মারামারি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এ সময় ছুরি দিয়ে ফাহাদের পিঠে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও ফাহাদের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাহাদকে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়াও অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত ইমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। 

নিহত ফাহাদের বন্ধু ও প্রত্যক্ষদর্শী রায়হান ও নিসান জানায়, আগে থেকেই যে কোনো বিষয়ে ঝামেলা ছিল। এনিয়ে আজকে হাতাহাতিও হয়েছে। এমন সময়েই হঠাৎ করে অপরপক্ষ টিপ চাকু বের করে মেরে পালিয়ে যায়। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মৃত্যুবরণ করে। তবে কী নিয়ে ঝামেলা তা তারা জানে না। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকালকেও তাদের মধ্যে একটা ঝামেলা হয়েছে। এনিয়ে আজকে আবারও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে ছুরি মেরে দেয়। দুই কিশোর গ্যাংয়েরই ১০-১২ জন করে মারামারিতে অংশ নিয়েছিল। 

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. নাজির আহমেদ জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ফাহাদের মৃত্যু হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আরেকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, ছুরিকাঘাতে এক কিশোর নিহত হয়েছে। তার মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর