দক্ষিণাঞ্চলের নৌরুটেও স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ স্বজনদের সাথে ঈদ করতে ফিরছে গ্রামের বাড়িতে। এবার ঈদের ছুটি বেশি আর ভোগান্তিহীন সড়ক ব্যবস্থা হওয়ায় বাড়তি চাপ নেই বরিশাল নদী বন্দরে।
লঞ্চগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও দুই বছর আগে যে ঠাসাঠাসি আর ঝুঁকি নিয়ে আসতে হতো সেই চিত্র চোখে পড়ছে না। লঞ্চের যাত্রীদের কাছেও যাত্রা স্বস্তিদায়ক বলে মনে হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) মাঝরাতে নদী বন্দরে ঘরমুখো মানুষদের সাথে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে।
বরিশাল নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিদর্শক কবির হোসেন জানিয়েছেন, বুধবার ৭টি সরাসরি সার্ভিস, ২টি ভায়া ও একটি বিআইডব্লিউটিসির স্টিমার যাত্রী নিয়ে এসেছিল। আর বৃহস্পতিবার ঢাকা বরিশাল রুটের ৮টি লঞ্চ, বরগুনা ও পটুয়াখালী রুটের দুটি ভায়া এবং একটি স্টিমার এসেছে।
তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তায় আমরা সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। মানুষ নিরাপদে ঘরে ফিরতে বাড়ছে। শুক্রবার যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বরগুনা রুটের এমভি পূবালী ১ লঞ্চের যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি ঈদ আনন্দের জন্য। সড়ক পথেও যেতে পারতাম। তবে লঞ্চের যাত্রাটা আমরা উপভোগ করি, তাই লঞ্চেই এসেছি। তাছাড়া লঞ্চে স্বাচ্ছন্দ্যে আসা যায়।
বরিশাল রুটের এমভি মানামী লঞ্চের যাত্রী তারিকুল ইসলাম বলেন, বছরের অন্য সময়ের চেয়ে বেশ ভালোই যাত্রী হয়েছে। কেবিন-ডেক সব পূর্ণ ছিল যাত্রীতে। তবে আগে যেমন পা ফেলার জায়গা থাকতো না, মানুষ দাঁড়িয়ে আসতেন তেমন নয়।
সঙ্গে থাকা আরেক যাত্রী মিতু বলেন, স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছি। আগে তো লঞ্চ ছাড়া মানুষের গতি ছিল না। এখন সড়ক ও লঞ্চ দুটো পথেই যেতে পারে বিধায় কোনো রুটেই অস্বাভাবিক চাপ দেখছি না।
এমভি অ্যাডভেঞ্জার ৫ লঞ্চের যাত্রী খোকন বলেন, যাত্রীর চাপ যেই বেড়েছে লঞ্চগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছে। এর আগে ডেকে দুই-আড়াইশ টাকায় নিলেও এখন ৪০০ টাকা করে রাখছে।
এমভি অ্যাডভেঞ্জার-৫ লঞ্চের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ছুটির প্রথম দিনে যাত্রী সংখ্যা ভালোই ছিল। তবে অন্যান্য ঈদের মতো উপচে পড়া ভিড় নেই। বরিশালের রুটের লঞ্চে যা হয়েছে, ভায়া রুটে তেমন নেই।
লঞ্চঘাট ঘুরে দেখা গেছে, রাত আড়াইটা থেকে ৪টার মধ্যে সবগুলো নৌযান যাত্রী নিয়ে নদী বন্দরে নোঙর করেছে। নদী বন্দর এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তার জন্য নৌ-পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। র্যাব-৮ এর উদ্যোগে স্থাপন করা হয়েছে সাপোর্ট সেন্টার।
বরিশাল সদর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, স্বাভাবিকের চেয়ে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌ-পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/ওএফ