ভোলায় কৃষকের মুখে সূর্যমুখীর হাসি
বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। দূর থেকে দেখলে মনে হতে পারে বিশাল হলুদ গালিচা। একটু কাছে গেলে চোঁখে পড়বে মনোমুগ্ধকর সূর্যমুখী ফুলের। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সূর্যমুখীর খেত। বাতাসের দোলে ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে তার সৌন্দর্য উপভোগের। ভোলায় গত বছরের মতো এবারও সূর্যমুখীর ভালো ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
চারদিকে হলুদ রঙের ফুলের মনমাতানো ঘ্রাণ আর মৌমাছিদের এক ফুল থেকে অন্য ফুলে ছুটে চলায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের জমি। এমন দৃশ্যের দেখা মিলবে ভোলার বিভিন্ন এলাকায়। আর চারদিকে হলুদ রঙের সূর্যমুখীর এমন হাসিতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা। কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় দিন দিন সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাদের।
বিজ্ঞাপন
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার ভোলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর জমিতে। এতে বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। ফলে সফলতার আলো দেখছেন তারা।
কৃষকরা জানান, মৌসুমের শুরুর দিকে বৃষ্টি হওয়ায় ফুলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। অনেক বীজ পুষ্ট হতে পারেনি। তা না হলে ফলন আরও বেশি হত।
সূর্যমুখীর এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই শতশত মানুষ ভিড় করেন সূর্যমুখী বাগানে। ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী কামরুল বলেন, বাসা বাড়িতে বিভিন্ন রকমের ফুলের বাগান করা যায়। কিন্তু সূর্যমুখী ফুলের বাগান করা খুব একটা হয়ে উঠে না। এছাড়া একসঙ্গে অনেক সূর্যমুখী ফুল দেখে মনটা ভালো হয়ে যায়।
পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের কৃষক মোস্তফা মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি প্রথমবারের মতো ১৪ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। প্রায় ৪ মাস আগে জমিতে সূর্যমুখীর চারা লাগিয়েছি। আর ২০ থেকে ২৫ দিন পর এই ফসল কাঁটতে পারব। আমার জমিতে ২ হাজার ৬০০ চারা রয়েছে। আশা করছি সূর্যমুখী চাষে আমি অধিক লাভবান হতে পারব।
রাজাপুর ইউনিয়নের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে তিনি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। সফলতার মুখও দেখছেন। আগামী দিনে এই চাষ আরও বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী দিনে ভোলার অন্যান্য এলাকায় যাতে এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা যায়, সেজন্য কৃষকদের বীজ, সারসহ প্রযুক্তিগত সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। অন্যান্য তেলের তুলনায় সূর্যমুখী ফুলের তেলের চাহিদা বেশি। তাই আমরা এই তেলজাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
এবিএস