পরিবারের অভিযোগ
র্যাব হেফাজতে মায়ের মৃত্যু, এবার ছেলে নিখোঁজ
নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর এবার তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকত নিখোঁজ বলে জানিয়েছে তার পরিবার। সোমবার শহরের খাস নওগাঁ মহল্লায় সৈকতের নানী বাড়ি ও জনকল্যাণ মহল্লার ভাড়া বাড়ির কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তার স্বজনরা দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুলতানা জেসমিন নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। শহরের জনকল্যাণ মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি। গত বুধবার সকালে অফিসে যাওয়ার পথে তাকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
আটকের প্রায় ২ ঘণ্টা পর দুপুরে জেসমিনকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র্যাব। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। পোস্টমর্টেম শেষে শনিবার বিকেলে নওগাঁ সরকারি গোরস্তানে র্যাবের গোপন উপস্থিতিতে লাশটি দ্রুত দাফন করা হয়।
এদিকে, সোমবার সুলতানা জেসমিনের পরিবার থেকে দাবি করা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকতকে পাওয়া যাচ্ছে না।
>> র্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যু
সোমবার দুপুরে শহরের জনকল্যাণ মহল্লায় সৈকতদের ভাড়া বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সৈকতের নানা বাড়ি গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তখন তার মামা সোহাগ বলেন, ‘সৈকত বাড়িতে নেই।’
পরে সোমবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে সৈকতের অবস্থান জানতে চাইলে তার মামা সোহাগ বলেন, ‘সৈকত কোথায় আছে আমার জানা নেই। বোনকে হারিয়ে এমনিতেই আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। দয়া করে আমাদের নতুন করে আর কোনো প্রশ্ন করবেন না।’
>> র্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যু : রাষ্ট্র কেন মামলা করল না?
সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, ‘সৈকত গত রাতে মায়ের শোকে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিবেশী এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুমিয়েছিল। এরপর সকাল থেকে তাকে আর দেখিনি। শুনলাম তাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তার সন্ধানে খোঁজাখুঁজি চলছে।’
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফৌজিয়া হাবিব খান বলেন, ‘শহর থেকে কোনো যুবক নিখোঁজ হয়েছেন এমনটি জানা নেই। স্বজনরা সাধারণ ডায়েরি করলে তাকে খুঁজে পেতে সব ধরনের আইনগত সহযোগিতা প্রদান করা হবে।’
আরমান হোসেন রুমন/ওএফ