নরসিংদীতে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে আয়া ও নার্স মিলে এক নারীর সন্তান প্রসব করানোর সময় টানা হেঁচড়ায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রসূতিকে জোর করে ডেলিভারি করানোর কয়েক ঘণ্টা পরে স্বজনেরা ভেতরে গিয়ে নবজাতকের মরদেহ দেখতে পান। 

বুধবার (২২ মার্চ) ভোরের দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাতে ওই নারীর প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে নরসিংদী সদরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তার স্বামী মো. সুমন মিয়া। তার স্বামীর বাড়ি শহরের সাঠিরপাড়া নবাববাড়ি এলাকায়। এ ঘটনার পরপরই সদর হাসাপাতালের  মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ঘেরাও করে ওই নারীর স্বজনেরা।

প্রসূতির স্বামী সুমন মিয়া বলেন, গতকাল রাতে প্রসব বেদনা উঠলে স্ত্রীকে এখানে নিয়ে আসি। সেখানে খোঁজ করে জানতে পারি ডাক্তার নেই। ডাক্তার না থাকায় দুইজন নার্স এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কেন্দ্রের আয়া ওম্মে হাবিব্বা ডেলিভারি করাতে পারবেন বলে আমার স্ত্রীকে নিয়ে যান। আমি তাদের বলেছিলাম যদি সমস্যা মনে করেন তাহলে আমাকে জানান। প্রয়োজনে সিজার কিংবা আমি আমার স্ত্রীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাব। কিন্তু হাসপাতালের নার্সরা রোগী দেখে জানান, নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান হবে। এরপর তারা বিভিন্ন ওষুধ খাইয়ে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করেন। রাতে ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে একজন নার্স ও আয়া ওম্মে হাবিব্বা মোট দুইজন মিলে আমার স্ত্রীর ডেলিভারি করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর নবজাতকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ধরে টেনে-হেঁচড়ে ডেলিভারি করার চেষ্টা করেন। আমি বারবার সিজার অপারেশনের কথা বললেও তারা আমাকে ও আমার স্বজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর গিয়ে দেখি আমাদের বাচ্চা আর নেই। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সদরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে পরিবার কল্যাণ আয়া ওম্মে হাবিব্বা কথা বলতে রাজি হয়নি এবং নার্সরাও কেউ কথা বলেনি।

মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার গোপাল চন্দ্র সূত্রধর বলেন, আমি এ বিষয়ে জানতে পেরেছি। এটি নিয়ে তদন্ত করা হবে। যদি আমার এখানে কেউ অভিযুক্ত প্রমাণিত হয় তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তন্ময় সাহা/আরকে