আদালতে হাজিরা দিতে এসে বাদীর মারধরে ২ বিবাদী আহত
লক্ষ্মীপুর আদালতে হাজিরা দিতে এসে মো. ফরিদ (৩৪) ও আব্দুল কাদের (৪৬) নামে দুই ব্যক্তি মামলার বাদীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এসে তাদের রক্ষা করে।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা জাহিদুর ইসলাম জুয়েল ও তার ভাই সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা এ অভিযোগ করেন। এর আগে দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালত সংলগ্ন মাদাম ব্রিজের পশ্চিম পাশে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা পূর্ব ভোলাকোট গ্রামের সৈয়দ আহমদের ছেলে। অভিযুক্ত জুয়েল উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য।
বিজ্ঞাপন
আহত বিবাদী ফরিদ রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের ভোলাকোট গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে ও কাদের একই এলাকার আনোয়ার উল্যার ছেলে।
হামলার শিকার ফরিদ ও আবদুল কাদের জানান, সাইফুল গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রামগঞ্জের আদালতে তাদের ৫ জনের নামে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- শহিদুল ইসলাম মোহন, আরিফ হোসেন ও নিজাম উদ্দিন মানিক। মামলায় তারা জামিনে রয়েছেন। মঙ্গলবার সবাই আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। এর মধ্যে বিবাদী ফরিদ ও কাদের আদালতের সামনে থেকে রামগঞ্জের উদ্দেশ্যে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। ঘটনাস্থল মাদাম ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছলে সাইফুল ও জুয়েল অটোরিকশার গতিরোধ করে অটোরিকশা থেকে ফরিদ ও কাদেরকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে ফরিদ ও কাদের দৌঁড়ে আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী মো. ফরিদ বলেন, দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে জুয়েল স্থানীয় ৩৫ জন কৃষকের প্রায় ৪০ একর জমি দখল করে পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করছে। সেখানে আমাদের জমিও রয়েছে। প্রতিবাদ করলেই জমির প্রকৃত মালিকদের ওপর হামলা করা হয়। গেল ১১ ফেব্রুয়ারি সাজানো ঘটনায় তার ভাই সাইফুলকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় হাজিরা দিতে এসে ফের তাদের হামলার শিকার হয়েছি। এলাকায় জুয়েলের বাহিনী রয়েছে। তাদের হামলা-মামলায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ইউনুস আলী মিন্টু বলেন, হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদ ও কাদের হামলার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি ন্যাক্কারজনক।
বক্তব্য জানতে জাহিদুল ইসলাম জুয়েল ও তার ভাই সাইফুল ইসলামের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইসমাইল বলেন, ৯৯৯-এ কল পেয়ে দুইজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাদেরকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরকে