‘ঘুম থেকে উঠে শুনি আমার ছেলে দুনিয়াতে নাই’
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আজিজনগরে বিজিবির বাসের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত চারজনের বাড়িই চকরিয়ার হারবাংয়ে। শনিবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের আজিজনগর ১২নং ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনদের হস্তান্তর করে। তাদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিজ্ঞাপন
নিহতরা হলেন- উত্তর হারবাং আজিজনগর ৯নং ওয়ার্ডের নগর কলাতলি এলাকার আবুল বাশেরের ছেলে মো. হামিদ (২৯), মৃত লাল মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৪), মো, সিদ্দিকের ছেলে রাসেল (২৬) ও হারবাং করমুহুরী পাড়ার ৮নং এলাকার মোহাম্মদ দানু মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৪)। এরা সবাই পিকআপ ভ্যানের আরোহী ছিলেন।
বিকেল ৪টার দিকে মো. হামিদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। বাড়িতে মরদেহ পৌঁছানোর পর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন হামিদের বাবা আবুল বাশের। কান্না করে বলছিলেন- আজ যদি কাজে না যেত এটা হতো না। আমার ছেলে আজ কাজে যেতে আগ্রহী ছিল না। কেন পাঠালামরে বাপ।
দুর্ঘটনার সময় পিকআপ ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই নজরুল ইসলাম ও হামিদের মৃত্যু হয়। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম ও রাসেল চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়।
নিহত রাসেলের বাবা মো. সিদ্দিক বলেন, আমরা ঘুম থেকে উঠার আগেই আমার ছেলে ঘর থেকে বের হয়। ঘুম থেকে উঠে শুনি আমার ছেলে দুনিয়াতে নাই।
চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন রুদ্র বলেন, লোহাগাড়া থেকে একটি মিনি পিকআপ ভ্যান মহাসড়কের আজিজনগর ১২নং ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা বিজিবির বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন। এ সময় আরও ছয় যাত্রী আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই যাত্রী মারা গেছেন। বাকি আরোহীদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও পিকআপ ভ্যানটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। নিহতদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
সাইদুল ফরহাদ/আরএআর