পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ২৩ দিনের শিশুর ক্যানোলা খোলার সময় হাতের আঙ্গুল কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের আঞ্জুয়ারা খাতুন নামের এক আয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিশুটির পরিবারের স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। আজ (শুক্রবার) রাতে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।

শিশুর পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত কারণে ২৪ দিনের নবজাতককে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শিশু কন্যা মিষ্টি পালকে ভর্তি করেন বাবা চন্দন পাল। ২ মার্চ সকালে শিশুটির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে সেদিন দুপুরে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল এমন সময় নার্সের বদলে শিশুটির হাতে লাগানো ক্যানোলা খুলতে যান আঞ্জুয়ারা খাতুন নামে একজন আয়া। তখনি বাঁধে বিপত্তি। কাঁচি দিয়ে ক্যানোলা কাটতে গিয়ে শিশুটির ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুলের নখের অগ্রভাগ কেটে ফেলেন আয়া। তখন শিশুটির চিৎকারে ছুটে আসেন পাশের অন্য রোগীরা। তখন সুযোগ বুঝে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত আয়া। 

নার্সের কাজ কীভাবে একজন আয়া করল এমন প্রশ্ন তোলের অন্য রোগীর স্বজনেরা। একজনের ভুলে একটি শিশুর অঙ্গহানি মেনে নিতে পারছে না কেউই। 

শিশুটির বাবা চন্দন পাল বলেন, ক্যানোলা খোলার জন্য নার্সকে ডাকাডাকি করলে সেখানকার আয়া এসে ক্যানোলা খুলে দেয়। ক্যানোলা না খোলার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও শোনেনি কথা। এই ওয়ার্ডের অন্য রোগীর আত্মীয়স্বজনও বিষয়টি নিষেধ করেন। আমাদের মেয়েটির ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল। এর বিচার কে করবে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

ঘটনার পর অভিযুক্ত আয়া আঞ্জুয়ারা খাতুন পলাতক রয়েছেন। 

এ বিষয়ে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল  হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর বলেন, এ ধরনের একটি কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্দু বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে পুলিশ কাজ করছে। দোষী সাব্যস্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাতের তিনটি আঙুল হারায় ১৩ মাস বয়সী শিশু তাছিম। 

রাকিব হাসনাত/এমএ