সেই শিশুকে ভিক্ষুকের কোলে রেখে চলে যাওয়ার কারণ জানালেন মা
লক্ষ্মীপুরে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে ভুলে বৃদ্ধা ভিক্ষুক সালমা বেগমের (৭০) কোলে ৩ মাসের শিশু মাহিন হোসেনকে রেখে চলে যান তার মা। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাত ৯টার দিকে সদর মডেল থানায় এমনটাই জানিয়েছেন শিশুটির মা সুরমা বেগম (৩২)।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির জেলা সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন ও জেলা কমিউনিটি পুলিশের সদস্য সচিব জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ উপস্থিত ছিলেন। জেলা পুলিশ সুপার শিশুটির মা ও দাদা হাফিজ উল্যার সঙ্গে কথা বলেছেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন>>>ভিক্ষুকের কোলে শিশুকে রেখে চলে গেছেন মা!
পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, এখনই আমরা শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছি না। আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। শিশুটি বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার দম্পতির হেফাজতে রয়েছেন।
শিশু মাহিন রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিরন হোসেনের ছেলে। মিরন-সুরমা দম্পতির সংসারে আরও ৩ মেয়ে রয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
শিশুটির বাবা মিরন দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে চাকরি করেন। ৪ বছর আগে তিনি এসে ধার দেনা ও ঋণ নিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। প্রায় ৭-৮ মাস আগে ফের তিনি সৌদি চলে যান। কিন্তু ঠিকমতো ঋণের টাকা দিচ্ছিলেন না তিনি। এতে তার স্ত্রী সুরমা ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। এ নিয়ে প্রায়ই মোবাইল ফোনে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হতো।
সুরমা বেগম জানিয়েছেন, তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ চরমনসা গ্রামের মিয়ারবেড়ি এলাকায়। বুধবার (১ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে বাসযোগে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকার ভাড়া বাসায় আসছিলেন। বাস থেকে তিনি শিশুটিকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পৌরসভার মজুপুর এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের সামনে নামেন। এর আগে বাসে তার স্বামীর সঙ্গে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। এতে দুশ্চিন্তা থেকে শিশুটিকে তিনি ভিক্ষুকের কাছে রেখে চলে যান। ভুলে শিশুটিকে নেননি তিনি।
পরে ভিক্ষুক সালমার কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের ভাই বেলালের পরিবারের হেফাজতে রাখেন। বাসায় যাওয়ার পর সন্ধ্যায় শিশুটির কথা মনে পড়ে তার মায়ের। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকজন।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএ