মা-বাবার কোলে ফিরল কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া যাওয়া সেই রাতুল
চট্টগ্রাম থেকে কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া চলে যাওয়া সেই প্রতিবন্ধী কিশোর মো. রাতুল ইসলাম ফাহিম (১৪) অবশেষে বাড়িতে ফিরেছে। বাড়ি থেকে নিখোঁজের দীর্ঘ তিন মাস নয় দিন পর অবশেষে ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশি তার বাবা-মাসহ স্বজনরা।
তবে কীভাবে কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া চলে গিয়েছিল এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছে না বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রাতুল। সে একেক সময় একেক কথা বলছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ছেলেকে বুকে ফিরিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাতুলের হতদরিদ্র বাবা-মা।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় রাতুল। রাতুলের সঙ্গে ছিলেন কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কল্যাণ সহকারী মোকছেদ আলী। তিনি ওইদিন রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে রাতুলকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন : কন্টেইনারে মালয়েশিয়া যাওয়া কিশোর কুমিল্লার দিনমজুরের ছেলে
রাতুল কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে। পেশায় দিনমজুর ফারুকের তিন ছেলের মধ্যে রাতুল সবার বড়। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাতুল ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন মো. ফারুক মিয়া।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ফারুক মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- গত বছরের ১৩ নভেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় রাতুল। পরবর্তীতে তারা গত ২০ জানুয়ারি রাতুলকে মালয়েশিয়ায় পাওয়ার খবর পান।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল আলম কমল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতুল ও তার বাবা ফারুক মিয়া অফিসে এসেছিলেন। তাদের সহায়তার জন্য টিন বরাদ্দ দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কন্টেইনার মালেশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১৬ জানুয়ারি মালেশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের একটি খালি কন্টেইনারের ভেতর থেকে মানুষের শব্দ শুনতে পান নাবিকরা। এরপরই কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তারা। ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কন্টেইনার খুলে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাকে রোহিঙ্গা বলে ধারণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও দেখে রাতুলকে শনাক্ত করে তার পরিবারের সদস্যরা।
আরিফ আজগর/এমজেইউ