এমন বঙ্গবন্ধু কর্নার আর একটিও নেই
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রাজশাহীর মডেল বঙ্গবন্ধু কর্নার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এটি গড়েছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)।
মুজিব শতবর্ষ পালনের অংশ হিসেবে আরডিএ ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার স্কয়ার ফিটের এ কর্নার গড়ে তোলা হয়েছে। ২৬ মার্চের আগেই এটি চালু হবে।
বিজ্ঞাপন
রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, সোম ও মঙ্গলবার কর্নারে আসছে বঙ্গবন্ধুর জীবন, ইতিহাসসমৃদ্ধ মূল্যবান এবং দুষ্প্রাপ্য বই। সেই সঙ্গে জাতির জনকের জীবনঘনিষ্ঠ বেশ কিছু আলোকচিত্র আসবে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপকরণে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো কর্নার।
আরডিএর প্রকৌশল শাখা সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রথম দফায় বঙ্গবন্ধু কর্নারের দেয়াল এবং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি স্থাপন করা হয়। পাঁচ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয় চার লাখ টাকা। পরের ধাপে ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি অটোমেশন ডোর এবং কাচের ওপরে ছবি বসানো হয়। এ কাজে পাঁচ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয় পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
তৃতীয় ধাপে বই রাখার র্যাক এবং সিলিংয়ের কাজ করা হয়। ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এ কাজের জন্য পাঁচ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয় পাঁচ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
চতুর্থ ধাপে ২০২০ সালের ১৬ মার্চ এক লাখ ২২ হাজার টাকায় কেনা হয় ৫২ ইঞ্চির এলজির এলইডি টেলিভিশন। দুই লাখ ৯২ হাজার টাকায় কেনা হয় দুই টনের দুটি এসি।
কর্নারের নির্মাণকাজ তদারকি করেন আরডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল তারিক। তিনি বলেন, কর্নারটি ব্যতিক্রমভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। প্রায় সাড়ে ছয় হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে এটি গড়ে তোলা হয়েছে। এমন পরিসরে বঙ্গবন্ধু কর্নার আর একটিও নেই।
তিনি আরও বলেন, কর্নারের চার পাশে ১০ মিলিমিটার কাচের দেয়াল রয়েছে। এসব কাচ অর্ডার দিয়ে বানানো। কাচে স্থায়ীভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের প্রতিকৃতিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ আল তারিক বলেন, ভেতরের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি স্থাপন করা হয়েছে। দেয়ালে লাগানো হবে এলইডি টেলিভিশন। যাতে বঙ্গবন্ধুর জীবনী প্রদর্শন করা যায়। কর্নারে সেন্সরসমৃদ্ধ স্লাইডিং অটোমেশন দরজা লাগানো হয়েছে। এমন দরজা রাজশাহীতে নেই।
কর্নারের দেয়ালজুড়ে র্যাক বসানো হয়েছে। এতে শোভা পাবে নানা ধরনের বই। আধুনিক দুটি এসি লাগানো হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে সোফা এবং বইপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী চলে আসবে। এটিকে মডেল হিসেবে ধরে কর্নার স্থাপন করেছে রাজশাহীর আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
আব্দুল্লাহ আল তারিক, নির্বাহী প্রকৌশলী, আরডিএ
আরডিএর চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে বঙ্গবন্ধু কর্নার ছিল না। এটি করা উচিত; এমন ভাবনা থেকে উদ্যোগ নিয়েছি। এটি তৈরিতে মন্ত্রণালয় কিংবা মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনা ছিল না। তবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছিল। তখন বঙ্গবন্ধু কর্নারের পরিকল্পনা পাঠাই। এরপর সংশ্লিষ্ট শাখার লোকজন বসে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন।
পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যেতে পারিনি। ধাপে ধাপে এটি সাজানো হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও করোনার কারণে বইপত্র কেনাসহ অনেক কাজ বাকি ছিল। সেগুলো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
আনোয়ার হোসেন, চেয়ারম্যান, আরডিএ
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, মডেল বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরির সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এরই অংশ হিসেবে কর্নার সাজাতে জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষের পরামর্শ চেয়েছিলাম। সম্প্রতি জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদল রাজশাহী এসে কর্নারটি পরিদর্শন করে কিছু পরামর্শ দেয়। তাদের পরামর্শ মেনেই বইসহ অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহের কাজ চলছে। এটিও শেষের পথে। আগামী ২৬ মার্চের আগেই কর্নারটি খুলে দেওয়া হবে।
এএম