ছবি : এএস রক্সির ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া

দেশের সর্ববৃহৎ আলু উৎপাদনকারী মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। আলুর ফলন কিছুটা কম হলেও দামে খুশি কৃষক। এছাড়া আলুতে এখনও পোকামাকড় ধরেনি। তাই কৃষক মহাখুশি। টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাসাইল, দিঘিরপাড়, কামাড়খাড়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের জমিগুলো উঁচু হওয়ায় চরাঞ্চলে পুরোদমে আলু উত্তোলন চলছে।

উপজেলার অন্যান্য জমিগুলোতে সবেমাত্র আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। গত বছর শেষ সময়ে আলুর দাম ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেলেও তা শুধু মধ্যস্বত্বভোগী যারা হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেছিলেন তারা লাভবান হয়েছেন। তৃণমূল কৃষকরা বিগত এক যুগ ধরে আলুতে লোকসান দিয়ে আসছেন। তবে এ বছর জমিতে ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে পেরে মহাখুশি তারা। এতেও ব্যাপক লাভবান হতে না পারলেও কিছুটা হবেন জানিয়েছেন কৃষকরা।

 

এ বছর টঙ্গিবাড়ীতে আলু আবাদ মৌসুমে ২ দফা বৃষ্টি হওয়ায় আলু চাষ বিলম্বিত হয়। এতে উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ার আশঙ্কা করছে তারা। এছাড়া এ বছর আলু বীজের মূল্য বেশি থাকায় উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বেড়েছে কৃষকের। তারপরেও দীর্ঘ একযুগ পরে জমিতে উচ্চমূল্যে আলু বিক্রি করতে পেরে মহাখুশি তারা।

সরেজমিনে উপজেলার হাসাইল, ধীপুর, পাচগাঁও, চাঠাতিপাড়া,যশলং, আউটশাহী, বেতকা, মটুকপুর, বালিগাঁও অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, আলুর জমিতে কৃষকের ব্যস্ততার অন্ত নেই। দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে শ্রমিকরা ছুটে এসেছেন আলু উত্তোলনের জন্য। বিশেষ করে নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ এলাকার শ্রমিকরা আলু উত্তোলন কাজ করছেন। 

এ সমস্ত আলু অনেকে হিমাগারে কেউ জমিতে আবার কেউ কেউ বাড়িতে সংরক্ষণ করছেন। আবার অনেকে জমিতেও আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে প্রান্তিক চাষিরা আলু উত্তোলনের সময় শ্রমিকের মজুরি ও আলু উৎপাদনে পূর্বের দেনা মিটানোর জন্য সকলেই জমিতে কমবেশি আলু বিক্রি করে থাকেন। তাই প্রান্তিক চাষিরা দাম ভালো পেয়ে অতি উৎসাহে আলু উত্তোলন করছেন। 

হাসাইল গ্রামের কৃষক বাবু হালদার জানান, আমার জমিতে আলু এ বছর খুব ভালো হয়েছে। পোকামাকড়ে ধরেনি। তবে দাম ভালো থাকায় আমরা এবার মহাখুশি। চাঠাতিপাড়া গ্রামের কৃষক জুয়েল তালুকদার জানান, উঁচু জমিগুলোতে ফলন ভালো হয়েছে। আলু লাগানোর সময় বৃষ্টি হওয়ায় নিচু জমিতে আলু আবাদ করতে বিলম্ব হয়েছে তাই নিচু জমিতে আলুর ফলন কম হয়েছে।

টঙ্গিবাড়ী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. সবুজ চৌধুরী জানান, এ বছর উপজেলায় ৯ হাজার ৮ শত হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। গত বছর ৯ হাজার ৬ শত হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছিল। তবে এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আলু উৎপাদন কিছুটা কম হবে। গত বছর ৩ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপদন হলেও এবার ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে আশা করছি।

ব.ম শামীম/এমএএস