সপ্তাহিক ছুটির দিনে দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন অনেকেই। সৈকত পাড়ে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। আগামীতে আরও বেশি পর্যটকের সমাগম হবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের। পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। কিছু দূর ঘুরে আবার তুলছেন ছবি। ঘোড়ার পাশেই রয়েছে বিচ বাইক। এসব বাইকে করে বালিয়াড়ির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরছেন পর্যটকরা। বালিয়াড়ি পেরিয়ে সমুদ্রের নীল জলরাশিতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কেউ দল বেঁধে এসেছেন, কেউ কেউ পরিবার-পরিজন বা প্রিয়জনকে নিয়ে এসেছেন সৈকতে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ইফতি বলেন, পরীক্ষা শেষ তাই নিজেকে একটু সময় দিতে প্রতিবারের মতো কক্সবাজারে ছুটে এলাম। সাগরের নীল জলরাশি দেখে মনটা জুড়িয়ে গেছে। এত সুন্দর সমুদ্র সৈকত থাকতে দেশের মানুষ কেন যে অন্য দেশে যায়? 

লাবিবা নামে আরেক পর্যটক বলেন, কক্সবাজার এসে খুব ভালো লাগছে। তবে রুম না পেয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলাম। অবশেষে অনেক চেষ্টার পর একটি হোটেলে রুম পেয়েছি। তবে তাও কিছুটা অতিরিক্ত দাম। 

কক্সবাজার শহরের অটোরিকশা চালক করিম বলেন, আমরা সপ্তাহিক ছুটির অপেক্ষায় থাকি। কারণ বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার এই তিন দিন পর্যটকের আনাগোনা থাকে। পুরো সাতদিনের রোজগার এই তিন দিনে করতে হয়।

হোটেল রয়েল টিউলিপের এজিএম নাভিদ চৌধুরী বলেন, আমাদের হোটেলে শতভাগ বুকিং আছে। আমরা আশাবাদী আগামী মাসে পর্যটকের আগমন আরও বেশি হবে। আমাদের টার্গেট ২১ ফেব্রুয়ারি। 

আল গণি রেস্তোরাঁর পরিচালক মোহাম্মদ রুবেল বলেন, পর্যটকদের সেবায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি। পর্যটন শিল্পের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য আমরা সব খাবারের দাম কম রাখছি। 

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত লাইফ গার্ড কর্মী ইউছুফ বলেন, সৈকতের যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আছে সেখানে আমাদের টিম কাজ করছে। পর্যটকরা গোসলে নামলে ওয়াচ-টাওয়ার থেকে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখছি।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হাওয়ার পর থেকে পর্যটকের আগমন তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বাকি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিলে পর্যটক আরও বৃদ্ধি পাবে। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মিজান বলেন, পর্যটকদের হয়রানি রোধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পর্যটকদের অভিযোগ শোনার জন্য আমরা হেল্প ডেস্ক চালু রেখেছি। অভিযোগ পেলে সাথে সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। 

সাইদুল ফরহাদ/আরএআর