নীলফামারীর ডিমলায় দক্ষিণ সোনাখুলির চর কুটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ শহীদ মিনারের জায়গা দখল করে বাড়ি ও গোয়ালঘর নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে আবু রায়হান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তবে ওই জমি তিনি কিনেছেন বলে দাবি করছেন।

এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদ জানালেও, লাভ হয়নি। এমনকি সালিশে বসেও সমাধান না হওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ সোনাখুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। বিদ্যালয়ের নামে ২০০৭ সালে ৩৪ শতাংশ জমি দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা তায়েজ উদ্দিন ও ফয়েজ উদ্দিন। এর মধ্যে ১২ শতাংশ জমির মালিকানা দাবি করে বাড়ি নির্মাণ করেন রায়হান। বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বাড়িঘর নির্মাণের কারণে প্রতিদিনের সমাবেশ ও খেলাধুলা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত আবু রায়হান বলেন, আমি তো স্কুলের জমি দখল করিনি। বিদ্যালয়ের জমিদাতা ফয়েজ উদ্দিনের ছেলের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়েছি। আমি বৈধ জমিতেই বাড়ি করেছি। এতে স্কুলের ক্ষতি হলো না লাভ হলো, এটা আমার দেখার বিষয় না।

বিদ্যালয়ের জমিদাতা তায়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা চার ভাই। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া ৬ একর ৬৪ শতাংশের মধ্যে ৩৪ শতাংশ জমি আমরা দুই ভাই স্কুলের জন্য দান করেছি। সমপরিমাণ জমি অন্যত্র ভোগদখল করছে ফয়েজ উদ্দিন। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর তার সন্তানেরা ওই জমির মালিকানা দাবি করে স্কুলের ১২ শতাংশ জমি বিক্রি করেছে বলে শুনেছি।

ফয়েজের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমরা ১২ শতক জমির মালিক। আমাদের অংশ আমরা বিক্রি করে দিয়েছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বলেন, বর্তমানে পাঠদানের জন্য দুটি টিনশেড ঘর আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, স্কুলের শহীদ মিনারহ পুরো মাঠ দখল করে বসতবাড়ি করেছে আবু রায়হান। অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি মাটি পরীক্ষা করেছে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ। এখন মাঠ দখল হওয়ায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে ভবনের বরাদ্দ।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যালয়ের জমির সঠিক সীমানা নির্ধারণের জন্য উপজেলা সার্ভেয়ারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সীমানা নির্ধারণ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শরিফুল ইসলাম/আরকে