ভেঙে ফেলা হচ্ছে এরশাদ শিকদারের সেই 'স্বর্ণকমল'
খুলনার কুখ্যাত খুনি এরশাদ আলী শিকদার ওরফে এরশাদ শিকদার নেই। রয়েছে তার বহুল আলোচিত সেই 'স্বর্ণকমল' নামের বাড়িটি। কিন্তু ভেঙে ফেলা হচ্ছে সেই বাড়িটির একাংশ। বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য বাড়িটির একপাশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
এদিকে ভবনটি ভাঙা দেখতে বাড়ির সামনে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
এরশাদ শিকদারের মেঝো ছেলে কামাল শিকদার জানান, কেডিএ'র ১০ কাঠা জমির ওপর তাদের একটি পুরাতন তিনতলা এবং আরেকটি দুইতলা বাড়ি ছিল। তারা কয়েকদিন আগে পুরাতন তিনতলা ভবনটি শ্রমিক দিয়ে ভেঙে ফেলেছেন। এখন দুইতলা ভবনটির অর্ধেকের মতো অংশ ভাঙা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, ১০ কাঠা জমির মধ্যে ৫ কাঠা জমি তার বাবা এরশাদ শিকদারের নামে এবং ৫ কাঠা তার মা খোদেজা বেগম এর নামে। তার মায়ের নামে যে অংশ মূলত সেই অংশের স্থাপনা অপসারণ করা হচ্ছে। ওই ৫ কাঠা জমির ওপর ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকার দুটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিকল্প চিন্তাও আছে। যদি ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায় তাহলে নিজেরাই ওই ৫ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা ভবন নির্মাণ করবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, 'স্বর্ণকমল' বাড়িটি খুলনার আলোচিত। পুরাতন হলেও মজবুত। বাইরে থেকে বাড়িটি খুব সুন্দর লাগতো। এরশাদ শিকদারের বাড়িকে ঘিরে মানুষের অনেক কৌতুহল। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই বাড়িটি দেখতে আসতো। হঠাৎ করেই দেখছি বাড়িটি ভাঙা হচ্ছে। শুনেছি বাড়িটি ভেঙে ১০ তলা ভবন করা হবে। বাড়িটি ভেঙে ফেলায় খারাপ লাগছে।
বাড়ি ভাঙার কাজে থাকা নির্মাণ শ্রমিক মো. রবিউল বলেন, কিছুদিন হলো এরশাদ শিকদারের স্বর্ণকমল বাড়িটি ভাঙার কাজ করছি। বাড়ির একপাশ ভাঙা হচ্ছে। বাড়িটি ভাঙা হচ্ছে দেখতে মানুষ ভিড় করছে। ছবি তুলছে, ভিডিও করছে। বাড়ির একপাশে ১০ তলা বিশিষ্ট ভবন হবে। আরেকপাশ থাকবে।
বাড়ি ভাঙা দেখতে আসা আব্দুল আজিজ মিয়া বলেন, একসময় এসব জায়গা ফাঁকা ছিল। সবাই বাড়ি-ঘর তৈরি করেছে। এরশাদ শিকদারও জায়গা কিনে বাড়ি করেছে। নামকরা বাড়ি। দেশ-বিদেশেও এরশাদ শিকদারের স্বর্ণকমল বাড়িটি নাম করা। সেই বাড়িটি এখন ভাঙছে, খারাপ দেখায় না? খুলনায় এর চেয়েও বড় বড় বাড়ি আছে, তাতে কি ? নামতো এটারই। এখানে অনেক মানুষ আছে, দেখে।
সূত্রে জানা যায়, এরশাদ শিকদার জীবিত থাকাকালে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার মজিদ স্মরণীতে তৈরি করে বিলাশবহুল বাড়ি “স্বর্ণকমল”। বাড়ির ভেতর পেচানো সিড়ি দিয়ে উঠে যেতে হয় দোতলায়। পেছনেও রয়েছে একটি সিড়ি। বাড়ির প্রত্যেকটি ঘর সাজানো হয়েছিলো দামিদামি সব আসবাবপত্র ও শোপিচ দিয়ে।
তৈরির আগে থেকেই আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছিল স্বর্ণকমল। সমাপ্ত হওয়ার পর তা পরিণত হয়েছিল দর্শণীয় বস্তুতে। যা দেখার জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসেছে খুলনা শহরে। এমনকি বিদেশি পর্যটকরাও স্বর্ণকমলের সামনে গিয়ে একবারের জন্য হলেও বাড়িটি দেখেছেন। ফাঁসির রশিতে এরশাদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণকমলের আলোচনাও স্থিমিত হয়ে যায়।
মোহাম্মদ মিলন/এমএএস