নৌকাডুবিতে এখনো নিখোঁজ ৪, নদী পাড়ে অপেক্ষায় স্বজনেরা
নড়াইলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ চারজনের সন্ধান এখনো মেলেনি। নিখোঁজদের সন্ধানে নদীর দুপাড়ে বসে থাকা স্বজনদের উৎকণ্ঠার প্রহর যেন শেষ হওয়ার নয়। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে পাঁচ ডুবুরিসহ খুলনা, যশোর নড়াইলের ফায়ার সার্ভিস দলের উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।
নিখোঁজ চারজন হলেন- কালিয়া উপজেলার বাহিরডাঙ্গা গ্রামের এনামুল মন্ডলের ছেলে রয়েল মন্ডল (২৮), এনামুল মন্ডলের বড় মেয়ের জামাই ও কালিয়া গ্রামের মৃত খালেক শেখের ছেলে মাহমুদ শেখ (৪৩), এনামুল মন্ডলের বড় ভাইয়ের মেয়ের জামাই ও জোকর চর গ্রামের মতিয়ার শেখের ছেলে খানজে শেখ (৫৭) এবং হামিদপুর ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামের টুকু শেখের ছেলে চৌকিদার লাভু (৩২)।
বিজ্ঞাপন
বৃহত্তর যশোর জোন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। সকাল থেকে আমাদের ডুবুরি দলসহ উদ্ধার অভিযানে একাধিক টিম কাজ করছি। স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নৌকারডুবির স্থান শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনা করছি। নদীতে জোয়ার-ভাটার কারণে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি নিখোঁজদের উদ্ধারের আশা খুব ক্ষীণ। আমরা নিজেরা অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় নবগঙ্গা নদীর সঙ্গে যুক্ত সব জায়গায় খবর পাঠিয়েছি। আমাদের উদ্ধার অভিযান চলমান থাকবে।
মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার পর নড়াইল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুনসহ জেলার উর্ধতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
গত রাতে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. শফিকুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, লোকজনের চিৎকারে ঘটনার পরে রাতেই আমরা কয়েকজন মিলে একটি নৌকা নিয়ে উদ্ধারে যাই। নদীর মধ্যে ৫ মহিলা শিশুসহ মোট ১১ জনকে উদ্ধার করি। এর মধ্যে মা ও ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাই। যাদের উদ্ধার করি তারা বলে আরও বেশ কয়েকজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘন কুয়াশার কারণে কিছু দেখা যাচ্ছিল না তারপরও সারারাত আমরা আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেছি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সালামাবাদ ইউনিয়নের বাহিরডাঙ্গা ও পার বাহিরডাঙ্গা গ্রামের মধ্যবর্তী নবগঙ্গার মাঝ নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। পার বাহিরডাঙ্গা গ্রামে এক আত্মীয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ১৮ থেকে ২০ জন স্বজন ও প্রতিবেশী বাহিরডাঙ্গা গ্রাম থেকে নৌকাযোগে রওনা দেন। অতিরিক্ত যাত্রীর ভারে নবগঙ্গার মাঝ নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় কালিয়া উপজেলার বাহিরডাঙ্গা গ্রামের ইমামুল মন্ডলের মেয়ে ও বাবুপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩০) এবং তার দুই বছর রয়সী ছেলে নাসিম শেখের মৃত্যু হয়।
সজিব রহমান/আরকে