ফরিদপুরে পদ্মার পাড়ে ঘুড়ি ও ফানুস উৎসবে মানুষের ঢল
ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর পাড়ে ধলার মোড়। যেদিকে চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। শিশু, তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ সব মানুষের ঢল নেমেছে পদ্মার পাড়ে। আকাশের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে নানা রঙ ও ধরনের ঘুড়ি উড়ছে। দেখে মনে হচ্ছে আকাশে শত শত বিচিত্র রকমের পাখি উড়ছে। সন্ধ্যার পর উড়ছে ফানুস।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ফরিদপুর সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ধলার মোড়ে পদ্মা নদীর পাড়ে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। ‘চলো হারাই শৈশবে’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে টিম ফরিদপুর সিটি ও ফরিদপুর টাইমস ইউনির্ভাসিটি ষষ্ঠ এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
বিকেলে ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
আয়োজকরা জানান, ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি ঘুড়ি বিক্রিরও ব্যবস্থা ছিল। বিকেল ও সন্ধ্যায় সহস্রাধিক ঘুড়ি বিক্রি হয়েছে। এসব ঘুড়ি বিকেলে উড়ানো হয়। সন্ধ্যায় উড়ানো হয় ফানুস।
এ ঘুড়ি উৎসব দেখতে ফরিদপুর শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার লোকজন এসেছেন। মাদারীপুর সদরের বাসিন্দা শিক্ষার্থী আনিকা বুশরা বলেন, ঘুড়ি উৎসবে না আসলে বুঝতাম না লোক সমাগম কাকে বলে। পথে পিঁপড়ার সাড়ির মতো লোকদের হেঁটে, গিজ গিজ করে আসতে দেখেছি। বাঁধ ভাঙ্গা জনস্রোত বুঝি এ অবস্থাকেই বলে। হেটে আসতে হয়েছে কিছু পথ। আজকে অটোরিকশায়ও ভাড়া নিয়েছে বেশি।
ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর মহল্লার বাসিন্দা মুঈদ হোসেন গালিব বলেন, ঘুড়ি উৎসব উপলক্ষে যেমন ভীড় প্রত্যাশা করেছিলাম তার চেয়েও বেশি মানুষ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের সমাগম। ঘুড়ি ও ফানুস উড়ানোর দৃশ্য আসলে ভুলার মতো নয়।
ফরিদপুরের কানাইপুর থেকে থেকে ঘুড়ি উৎসব দেখতে এসেছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রিফাত হাসনাত। তিনি বলেন , ঘুড়ি উৎসব আসলে এখন ফরিদপুরের প্রাণের উৎসব হয়ে গেছে। এখন আমাদের এটাতে না আসলে ভালো লাগে না। প্রতি বছর ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বরের অপেক্ষায় আমরা থাকি। একটা দিন নিজেদের মতো আনন্দ করে ঘুড়ি উড়িয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কাটাই। এ এক অন্যরকম অনুভূতি।
টিম ফরিদপুর সিটির সভাপতি মো. এমদাদুল হাসান বলেন, এই উৎসবে বিজয়ী ১৫ জন প্রতিযোগীকে মুঠোফোনসহ বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি সন্ধ্যায় ফানুস উৎসবও অনুষ্ঠিত হয়।
জহির হোসেন/আরএআর