বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, আওয়ামী লীগের সরকার বিনা ভোটের সরকার। দিনের ভোট রাতে নিয়ে শেখ হাসিনা এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। মানুষের ভোটের কথা শুনলে শেখ হাসিনা আঁতকে উঠেন। কারণ এ দেশের মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে পেলে আওয়ামী লীগ ২০ আসনও পাবে না। সেই প্রমাণ মিলেছে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে। রংপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আগামীতে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নৌকার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে, যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়।

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর মহানগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূটির অংশ হিসেবে গণমিছিল শেষে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, এক সময় শেখ হাসিনাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছেন। তার নেতৃত্বে ১৭৩ দিন ঢাকাসহ সারাদেশে হরতাল-ধর্মঘট হয়েছে। গান পাউডার দিয়ে গাড়ি পুড়িয়ে ১১ জন মানুষকে হত্যা করেছে। এখন সেই শেখ হাসিনার সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করে। তারা এখন জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে ভয় পায়। অথচ এরশাদ বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল জাতির প্রয়োজনে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতির প্রয়োজনে। এখন সেই সময় এসেছে, দেশের মানুষ জেগেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত এক মাসে সারাদেশে ২৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ হামলা চালিয়ে সাড়ে ৫০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। একটা অগণতান্ত্রিক সরকারকে রক্ষা করতে পুলিশ বাহিনী যা করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে, তা ন্যাক্কারজনক।  

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন-নবী ডন প্রমুখ। এতে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, তাঁতী দল, কৃষক দল, ওলামা দল, জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সরকারবিরোধী দলগুলোর প্রথম যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মহানগরীতে গণমিছিল করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। গণমিছিলটি গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে ছালেক পেট্রোল পাম্প হয়ে শাপলা চত্বর প্রদক্ষিণ করে। পরে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।

এদিকে বিএনপির গণমিছিলকে কেন্দ্র করে রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে জুমার নামাজের পর নগরীর ভাঙ্গা মসজিদ মোড় এলাকা থেকে জামায়াত গণমিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। ওই মিছিল থেকে জামায়াত-শিবিরের ৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর