রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (রসিক) প্রচার-প্রচারণা আজ রোববার থেকে শেষ হচ্ছে। আগামী মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এই ভোট নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই, একতরফা নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

রোববার (২৫ ডিসেম্বর) প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন দুপুরে রংপুর মহানগরীর স্টেশন রোড জীবন বীমা মোড় এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ভোট নিয়ে আমাদের কোনো শঙ্কা নেই। তবে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি করতে আসা যেকোনো অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত আছি। নির্বাচন কমিশন একটা ফেয়ার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কমিটমেন্ট করেছে, আমরা সেই নিরিখে আস্থা রেখে নির্বাচন করছি। আমরা মনে করি এই নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।

সাবেক এই মেয়র বলেন, আমার আগের সরকারি দলের মেয়র পাঁচ বছরে ২৭০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করলেও আমার আমলে সাড়ে ১২০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান এজেন্ডা রংপুরের প্রাণ শ্যামাসুন্দরী খাল দখলমুক্ত করতে আমার আমলে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে মেয়র হিসেবে আমার করা উন্নয়ন, জনসম্পৃক্ততা বিবেচনা করে লাঙ্গলের পক্ষে গণজোয়ার উঠেছে।

মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আরও বলেন, এছাড়া এই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় এবং জামায়াতের এক প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় সেই উত্তাপ নেই। এবার লাঙ্গলের পক্ষে জনগণের সৃষ্ট গণজোয়ারে নির্বাচন একতরফা হবে।

ইভিএম নিয়ে শঙ্কা না থাকলেও এর পেছনের কারিগরদের নিয়ে শঙ্কা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটগ্রহণ নিয়ে গাইবান্ধার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে শান্ত রংপুর আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হবে। ইভিএম নিয়ে বিরোধীদলগুলোর যে অনাস্থা তা প্রকট হবে। এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি জাতীয় রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।

গণসংযোগে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, জেলা জাপার সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম-আহবায়ক মাসুদ নবী মুন্না, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আইন সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ ফারুক আলম, জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসানুজ্জামান নাজিম, মহানগর ছাত্রসমাজের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত আসিফসহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি নেতৃবৃন্দ।

এদিকে বিকেল পর্যন্ত গণসংযোগ শেষে সন্ধ্যায় সিটি বাজারে একটি নির্বাচনী পথসভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণার ইতি টানবেন জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

প্রসঙ্গত, নির্বাচনে মাঠের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে আজ থেকে পাঁচ দিনের জন্য মাঠে নেমেছে ৪৯ জন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। এর মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৩৩ জন এবং ১৬ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।

সিটি করপোরেশন গঠন করার পর রংপুরে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এবার মেয়র পদে ৯ জনসহ সংরক্ষিত ১১টি ওয়ার্ডে ৬৮ জন এবং ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে