মাগুরায় চাষের আওতায় আসছে পতিত জমি
প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে মাগুরায় চাষের আওতায় আনা হচ্ছে পতিত জমি। ইতোমধ্যে জেলার মহম্মদপুর উপজেলার প্রায় ২ হাজার হেক্টর পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কোথাও যাতে এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি না থাকে তার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থাকা স্থায়ী পতিত জমি এবং সাময়িক পতিত জমিতে আবাদের জন্য কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে জোরদার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সরকারিভাবে বীজ ও সার সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাময়িক ও স্থায়ী পতিত জমিতে চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বুধবার (২১ ডিসেম্বর) নহাটা ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামে নবগঙ্গা নদীর অববাহিকায় স্থায়ী পতিত ১২ একর খাস জমিতে চিনা বাদাম চাষ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
এর আগে তাদের উদ্যোগে উপজেলার শেখ হাসিনা সেতুর পূর্ব পাড়ে ১০ একর খাস জমিতে ভুট্টা ও সূর্যমূখী চাষ শুরু করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে স্থায়ী পতিত জমিতেও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও শাকসবজি চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুস সোবাহান বলেন, মহম্মদপুর উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমি ৮০-৮৫ দিন অনাবাদি থাকে। এই সময়ের মধ্যে যে ফসল উৎপাদন সম্ভব তার মধ্যে আমরা সরিষা উৎপাদনের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। এতে সয়াবিনের আমদানি কমবে এবং দেশীয় সরিষার উপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে। এজন্য সরকারিভাবেও তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, উৎপাদন বাড়াতে হবে। কোনো জমি পতিত বা ফেলে রাখা যাবে না। বাড়ির উঠানে হলেও দুটো লাউয়ের চারা লাগাতে হবে। সেই তাগিদ থেকেই নবগঙ্গা নদীর অববাহিকায় স্থায়ী পতিত ১২ একর খাস জমিতে আমরা চিনা বাদাম চাষ শুরু করেছি। ডিসি ইকো পার্কে আমরা ভুট্টা ও সুর্যমূখী চাষ করছি। এগুলো এক দিকে যেমন দৃষ্টিনন্দন হবে, অন্যদিকে উৎপাদন বাড়বে। এছাড়া এক ফসল থেকে অন্য ফসলের যে গ্যাপ সময়টুকু, সেটা কাজে লাগাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৈয়েবুর রহমান তুরাপ জানান, নহাটা ইউনিয়নে নদীর অববাহিকায় পতিত জমিতে আবাদ করা ফসলের লভ্যাংশ স্থানীয় উন্নয়নে ব্যয় করা হবে বলে ইউএনও জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। তার বাস্তবায়ন আমরা করছি। মহম্মদপুরে আমরা কৃষকদের পতিত জমিতে চাষাবাদের জন্য উদ্ধুদ্ধ করছি। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলায় উদ্বুদ্ধকরণ সভা আহ্বান করা হয়েছে।
মোহাম্মদ মিলন/এসপি