সাতক্ষীরায় বাড়ছে অনলাইন জুয়ায় আসক্তি, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
সাতক্ষীরায় জালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়া ‘ওয়ানএক্সবেট’। মোবাইল ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশের ব্যবসার অন্তরালে অধিকাংশ দোকানি অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকেন। জেলার তালা উপশহরে এখন ডজন খানেক অনলাইন জুয়ার এজেন্ট রয়েছে। অ্যাপস থেকে খোলা একাউন্টে নির্দিষ্ট এজেন্টের মাধ্যমে ঢুকানো হচ্ছে টাকা। মাদকের মতো এই নেশাতেও জড়িয়ে পড়ছে যুব সমাজ। অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব অনেকে এখন ঋণের দেয়া ঘরবাড়ি ছাড়া।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উঠতি বয়সী স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী কিংবা চাকরিজীবী সকলে আসক্ত এই ভয়ংকর নেশা অনলাইন জুয়ায়। অনলাইন জুয়ার অন্যতম মাধ্যম ওয়ানএক্সবেট নামের একটি অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলাকে ঘিরে বেড়েছে অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম। কাতারে খেলার এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরাতে। অনেকে এই জুয়ার ফাঁদে নিঃস্ব হয়ে এখন নিরুদ্দেশ। আবার অনেকে অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে আত্মহত্যা করেছে।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, বিশ্বকাপ ফুটবল থেকে শুরু করে ক্রিকেট সব কিছুতে রয়েছে অনলাইন বাজি। ফুটবলে কে গোল করবে, কোনো দল জয় লাভ করবে এসব নিয়ে অনলাইন জুয়াতে বাজি ধরা হয়। প্রশাসনের নাকের ডোগায় এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড চললেও পুলিশ এসব বন্ধের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
রফিক উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি জানান, বছর খানেক আগে তিনি অনলাইন জুয়ার প্রতি আসক্ত হন। ধীরে ধীরে তার কয়েক লাখ টাকা ধ্বংস হয়ে গেছে এই অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে। তার জানা মতে পাশ্ববর্তী এলাকার অনেক মানুষ মাদকের মতো ভয়ানক এই নেশার প্রতি আসক্ত হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিরুদ্দেশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউপি সদস্য জানান, সাতক্ষীরার তালা সদরে প্রায় ২০টির মতো এই জুয়ার এজেন্ট রয়েছে। বিকাশের দোকানের আড়ালে তারা এই ভয়ানক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে শ্রমিক ও চাকরিজীবী সকলে এই ভয়ানক জুয়ায় মত্ত। এতে করে তারা নানাবিধ অপরাধ কর্মকাণ্ডের দিকে ঝুঁকছে। প্রশাসনের উচিত অতিদ্রুত অনলাইন জুয়া বন্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
শরিফুল নামের এক ব্যক্তি জানান, জুয়া আসক্ত হয়ে ইতোমধ্যে আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেছে। স্কুল-কলেজ বাদ দিয়ে নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে এই জুয়া খেলছে তারা। অনেকে এই ভয়ানক নেশায় জড়িয়ে বাড়িঘর ছাড়া হয়েছে। প্রশাসনের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন নির্বাক। অধিকাংশ বিকাশ এজেন্টরা এই ওয়ানএক্সবেট নামক জুয়ার এজেন্ট। প্রশাসনের শুধু আশ্বাস নয় বাস্তবে ব্যবস্থা গ্রহণ দেখতে চাই।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান জানান, অবিভাকদের অধিকতর সচেতন হতে হবে। তাছাড়া এর সঙ্গে জড়িত সকলকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ঢাকা পোস্টকে জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলবো। যতদ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সোহাগ হোসেন/আরকে