ডোমারে ঘোড়দৌড় দেখতে মানুষের ঢল
নীলফামারীর ডোমারে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বোড়াগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়েজন করা হয়।
প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই দেবীগঞ্জ, ডিমলা, জলঢাকাসহ আশপাশের জেলা থেকে হাজারো মানুষ মাঠে জড়ো হন। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাঠ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিযোগিতায় নীলফামারীর বিভিন্ন উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড়, দিনাজপুর, বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫০টি ঘোড়া অংশ নেয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের মাঝখানে প্রাণপণে ছুটছে ঘোড়া। ঘোড়ার গতি বাড়াতে পিঠে বসানো হচ্ছে চাবুকের ঘা। উপস্থিত দর্শক হর্ষধ্বনি ও তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন সওয়ারিদের।
প্রতিযোগিতায় প্রতি গ্রুপে প্রথম ও দ্বিতীয় জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। ‘ক’ গ্রুপের ঘোড়ার দৌড়ে প্রথম হন বগুড়া থেকে আসা আল মামুন এবং দ্বিতীয় হন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাঁচপীরের জাহাঙ্গীর রেজা। ‘খ’ গ্রুপে ডোমারের আব্দুল হাদি প্রথম হন ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাঁড়বাড়ির মমিনুর রহমান দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ‘গ’ গ্রুপে বগুড়ার জহুরুল হক প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন একই জেলার মালেক হোসেন।
বগুড়া থেকে আসা আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে ঘোড়দৌড়ে অংশ নিচ্ছি। যেখানে ঘোড়াদৌড়ের খবর পাই সেখানেই ছুটে যাই। আয়োজকরাও খবর দেন। এটা আমার একটা শখ। আজকের খেলায় ‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছি। অনেক ভালো লাগছে।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা থেকে ঘোড়দৌড় দেখতে আসা সামিউল আরেফিন হৃদয় ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। খেলাগুলো মাঝেমধ্যে আয়োজন করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। আজকের এ খেলাটি দেখতে আমি ও আমার বন্ধুরা পঞ্চগড়ের বোদা থেকে এসেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে।
জলঢাকা উপজেলার বিপ্লব বর্মন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসলে এই খেলাগুলো প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। আগে বড় আয়োজনে ঘোড়দৌড় হতো এখন আর সেই ঐতিহ্য নেই। এমন আয়োজনে আমরা অত্যন্ত আনন্দ পেয়েছি।
খেলা পরিচালনাকারী আলহাজ আব্দুল্লাহহেল কাফি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছে। সবাই খুব আনন্দ পেয়েছে। আমরা প্রতি বছর ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করার চেষ্টা করব।
প্রতিযোগিতার আয়োজক উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, যুব সমাজ এখন বিপথগামী হচ্ছে। খেলাধুলাই পারে সেই বিপদের পথ থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে। এমন আয়োজন আরও করা হবে। পরবর্তীতে ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল ছাড়াও গ্রামীণ খেলাগুলো নিয়মিত আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর