বাংলাদেশে আন্দোলনে যারা হারে নির্বাচনে তারা বিজয়ী হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, কত হাঁকডাক, সরকার পতনের কত যে দিবাস্বপ্ন, কত যে রঙিন খোয়াব। কী, খেলা শেষ হয়ে গেছে? কোয়ার্টার ফাইনালে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। সামনে সেমিফাইনাল, তারপর ফাইনাল খেলা। 

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

বেলা ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ।

সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা নাকি বিজয় মিছিল করবে ১০ তারিখ। ১০ ডিসেম্বর তো চলে গেল। শুধু শুধু আতঙ্ক সৃষ্টি করা হলো, বিআরটিসি বাস পোড়ানো হলো। শত শত চালের বস্তার সঙ্গে বিস্ফোরক পাওয়া গেল নয়াপল্টনে। বলেছিল সবকিছু অচল করে দেবে। এখন তারা নিজেরাই অচল। ১০ দফা দাবি নতুন দেখলাম না, এটা পুরোনো কথা, পুরোনো গল্প, পুরোনো দাবি, নতুন করে নাটক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মৃত ঘোষণা করেছে। এরপরও আমরা খতিয়ে দেখছি, মেনে নেওয়ার মতো কোনো দাবি আছে কি না।

সম্মেলন শুরুর আগে দুই পক্ষের চেয়ার ছোড়াছড়ির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার দুঃখ, টেলিভিশনে শুনলাম চুয়াডাঙ্গায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, চেয়ার ছোড়াছুড়ি। এখন তো দেখছি শীতকালের সমুদ্রের মতো শান্ত। মনে হচ্ছে শীতের বঙ্গোপসাগর। এই মুহূর্তে পদ্মা নদীতে ঢেউ নেই। কেন শান্ত হলো এই পরিবেশ? কী কারণে? ১৫টি জেলায় সম্মেলনে কোথাও কিছু হলো না, এখানে (চুয়াডাঙ্গায়) কেন এই ধরনের গোলমালের সূত্রপাত হলো? সম্মেলনে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের তদন্ত করে বের করতে হবে। যারা শৃঙ্খলা নষ্ট করবে, তাদের আওয়ামী লীগে দরকার নেই। 

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শাসক নন, তিনি সেবক। পঁচাত্তরের পর রাজনীতিতে শেখ হাসিনার মতো ভালো, সৎ, সাহসী ও জনপ্রিয় নেতা আর একজনেরও নাম বলতে পারব না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের পাঁচ মাস আমদানি করার মতো রিজার্ভ আছে। তিন মাসের রিজার্ভ জমা থাকলেই দেশ স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে থাকে। এ নিয়ে সমালোচনা। বিদ্যুৎ নিয়েও এত কথা। এই বিশ্বকাপে রাত ৯টায়, ১টায়, বিকেল ৪টায় প্রতিদিন ৩-৪টা খেলা হয়েছে, সারা বাংলাদেশে কোথাও লোডশেডিং হয়েছে? এ কথা চুয়াডাঙ্গার লোকেরাও বলতে পারবে না। এই সংকটেও আমরা সব ঠিক রেখেছি।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিরুল আলম মিলন, পারভিন জামান কল্পনা ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

এদিকে সম্মেলন শুরুর আগে আসন নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। এতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ ছয়জন আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আফজালুল হক/আরএআর