গ্রেফতার আসামি জুয়েল/ ফাইল ছবি

গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুর এলাকায় দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহের জেরে রেহানা আক্তারকে (২০) গলাটিপে ধরার একপর্যায়ে মারা গেলে মরদেহ গুম করতে সাত টুকরো করে পলিব্যাগে ও বস্তায় ভরে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখেছিল স্বামী জুয়েল আহমেদ (২৪)। সোমবার (৮ মার্চ) গাজীপুরের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জুয়েল এ কথা জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রোববার (৭ মার্চ) গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুরে আরাবী ফ্যাশন সংলগ্ন তিনটি জায়গা থেকে রেহানার মরদেহের খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই দিনই তার স্বামীকে মনিপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার বিকেলে গাজীপুর আদালতে স্ত্রী খুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

নিহত রেহানা আক্তার সুনামগঞ্জের বিশ্বাম্ভরপুর থানার পলাশ ইউনিয়নের কচিরগাতি গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে। গ্রেফতার জুয়েল একই গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে।

জয়দেবপুর থানার এসআই মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, রেহানা ও জুয়েল সম্পর্কে বিয়াই-বিয়াইন। প্রেমে জড়িয়ে দুবছর আগে পালিয়ে বিয়ে করে গাজীপুরের মনিপুর এলাকায় জাকির হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকত। রেহানা ভাড়া বাড়ির পাশেই আরাবী ফ্যাশনে চাকরি করতেন। জুয়েল চাকরি হারিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। রেহানাকে বিয়ের আগে জুয়েল আরও একটি বিয়ে করে। বিষয়টি রেহানার কাছে গোপন করেছিল জুয়েল। সম্প্রতি বিষয়টি ফাঁস হলে তাদের মধ্যে দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ দেখা দেয়।

এর জেরেই বৃহস্পতিবার রাতে জুয়েল রেহানার গলা চেপে ধরে। একপর্যায়ে রেহানা মারা গেলে তার লাশ গুমের পরিকল্পনা করে স্বামী জুয়েল। পরে পাশের বাজার থেকে ২০০ টাকা দিয়ে একটি ছোরা কিনে ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রীর মরদেহকে সাত খন্ড করে জুয়েল। পরে কাপড়ে মুড়িয়ে এবং পলিব্যাগে ও বস্তায় ভরে হোতাপাড়া মনিপুর এলাকার ভাড়া বাড়ির আশেপাশে ফেলে রাখে।

পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হুদা জানান, রোববার দুপুরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে রেহানার লাশ উদ্ধার করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় তার স্বামীকে আটক করা হয়। পরে তার স্বাীকারোক্তি অনুযায়ী ভাড়া বাড়ির আশেপাশে তল্লাশি চালিয়ে রেহানার মরদেহের সাতটি খন্ড উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই হোসাইন শহিদ জয়দেবপুর থানায় মামলা করেছেন। 

প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে খুনের বিষয়টি স্বীকার করলে জুয়েলকে সোমবার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে সে বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

শিহাব খান/এসএসএইচ