বগুড়ার চরাঞ্চলে বাদাম চাষের ধুম
বগুড়ার দুই উপজেলার চরাঞ্চলে বাদাম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। বাদাম চাষে সার প্রয়োজন হয় না, সেচ দিতে হয় খুবই কম এবং নিড়ানি ছাড়াই অধিক লাভ হওয়ায় চরাঞ্চলে প্রাধান্য পাচ্ছে বাদাম। এমনকি দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা, ধারাবর্ষা, বোহাইল, ছোনপচা ও ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী চরে বাদাম লাগাতে ব্যস্ত কৃষকরা। জমি তৈরি করে বাদাম বপন করছেন তারা। কেউ শ্রমিক নিয়ে, কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে বাদাম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোনো পরিবারের ছোট-বড় সব সদস্য মিলে বাদাম চাষ করছেন।
বিজ্ঞাপন
সারিয়াকান্দি উপজেলার ছোনপচা চরের কৃষক আজাহার আলী বলেন, খুব কম খরচেই বাদাম চাষ করা যায়। বাদামের চাহিদাও বেশি আবার দামও বেশি। বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না। জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়।
ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী চরের খলিল উদ্দীন বলেন, প্রতি বছরই বাদাম চাষ করি। এবারো বাদাম চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ৭ মণ বাদাম উৎপাদন হয়। প্রতি মণ বাদাম গত বছর জমিতেই ৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি।
একই উপজেলার চর এলাকার মোমিন আলী বলেন, বাদাম চাষে সারের প্রয়োজন হয় না আবার বেশি সেচও লাগে না। তাই খরচ কম হয়।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ বলেন, বাদাম চাষাবাদে খুব কম খরচে অধিক লাভ পায় কৃষকরা। চরাঞ্চলে বেলে-দোআঁশ মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। চরের মাটি বাদাম চাষের উপযোগী। তাই সারিয়াকান্দি ও ধুনটের যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, চরাঞ্চলে স্থানীয় জাতের বাদাম চাষাবাদ ভালো হয়ে থাকে। যাদের হার্টের সমস্যা তাদের জন্য বাদাম বিশেষ প্রয়োজন। বাদাম শরীরের কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়ক।
বগুড়া কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক দুলাল হোসেন বলেন, বাদাম চাষে খরচ কম হওয়ায় বগুড়ার চরাঞ্চলে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার চরে ১১শ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন। আগামী দিনে আরও বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, বাদাম রোপণের এখন উপযুক্ত সময়। এ অঞ্চলের বাদামচাষিদের কৃষি বিভাগ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
আলমগীর হোসেন/এসপি