পেট্রোল এবং পানি দিয়ে বৈদ্যুতিক উপায়ে উৎপন্ন করা যাবে লিকুইড প্রিমিয়াম গ্যাস। শুনতে অবাক লাগলেও এমন একটি উদ্ভাবনী প্রজেক্ট আবিষ্কার করেছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রাম গোপাল বহুমুখী বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী।

নবম শ্রেণির অর্ণব, শাহেদ ও বিথি এ প্রজেক্টটি তৈরি করেছেন। তাদের এ প্রজেক্টটি তৈরিতে সার্বিক সহোযোগিতা করেছেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে যশোর টাউন হল মাঠে জেলা প্রশাসনের আয়োজিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় এ প্রজেক্টটি প্রদর্শনী করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, একটি বোতলে পানি এবং অন্য একটি বোতলে পেট্রোল নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ট্রান্সফরমার, এয়ারপাম্প মোটর, ক্যাপাসিটর। দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। এ সকল ইকুইপমেন্ট একটি আরেকটির সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক তার ও প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে। পাইপের শেষ প্রান্ত দিয়ে নির্গত হতে দেখা যায় লিকুইড গ্যাস। যেখানে দেয়াশলায়ের কাঠি জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ দিলে আগুন জ্বলে ওঠে।

প্রজেক্টির উদ্ভাবক অর্ণব বলে, বর্তমানে বাংলাদেশে গ্যাসের সংকট। প্রতিনিয়ত জ্বালানি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য আমরা এ পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছি। যার মাধ্যমে মানুষ সল্প খরচে জ্বালানি গ্যাস উৎপাদন করতে পারবে এবং তা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে পারবে। আর যেহেতু এ প্রজেক্টটি তৈরি করতে বিদুৎ এবং আগুন প্রয়োজন সেহেতু এটি ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে আমরা শিক্ষকদের সহোযোগিতা নিয়েছি। এ পদ্ধতিতে ৫০০ গ্রাম পেট্রোল এবং ৫০০ গ্রাম পানি থেকে প্রায় ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা এলপি গ্যাস উৎপাদন সম্ভব। প্রজেক্টটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা।

সহকারি শিক্ষক সাখাওয়াত বলেন, আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে এ উদ্দ্যেগটি নেয়। অতপর আমাদের কাছে ইচ্ছা প্রকাশ করে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায়  আমরা এটি তৈরিতে তাদেরকে সহোযোগিতা করি। আমরা মনে করি এ প্রজেক্টটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা আরও গবেষণা করলে অনেক কম খরচে পর্যাপ্ত এলপি গ্যাস উৎপাদন করা যাবে এবং দেশে গ্যাসের সংকট কমানো সম্ভব হবে।

ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সুমন কুমার কুন্ডু বলেন, বর্তমান সময়ে গ্যাস বিদুৎ দুটোরই চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলপি গ্যাসের মূল্য বাড়তে বাড়তে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে যে এই শিক্ষার্থীদের আবিষ্কৃত প্রজেক্টটি নিয়ে আরও গবেষণা করে পদ্ধতিটি কাজে লাগিয়ে দেশের জ্বালানি ক্ষেত্র উন্নয়ন করা।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে