ফেনীর পরশুরাম সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে নিহত কৃষক মেজবাহ উদ্দিনের (৪৭) মরদেহ উত্তর গুথুমা গ্রামে দাফন করা হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে বাদ আসর জানাযা শেষে তার মরদেহ দাফন করা হয়।  

এর আগে দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মেজবাহ উদ্দিনের মরদেহ  অ্যাম্বুলেন্স যোগে পৌর এলাকার উত্তর গুথুমা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার স্ত্রী ও চার মেয়ের কান্নায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মরদেহ অনেকটা গলে যাওয়ায় মেয়েরা শেষবারের মতো বাবার মুখ দেখতে পারেননি। তাদের আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 

স্থানীয় কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন সুমন জানান, মেজবাহ উদ্দিনের মরদেহ অনেকটা পচে গলে গেছে। মুখ থেতলে গেছে দেখার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। তাছাড়া ময়নাতদন্ত শেষে মাথায় হাড়গোড় দেখা যাচ্ছে। মরদেহ দেখানোর মতো কোনো অবস্থা নেই।

মেজবাহ উদ্দিনের জানাজায় উপস্থিত ছিলেন পরশুরাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম, পরশুরাম পৌরসভার কাউন্সিলর রাসুল মজুমদার স্বপন, নিজাম উদ্দিন সুমন, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন শরীফ মজুমদার প্রমুখ। 

পরশুরাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেজবাহ উদ্দিনের মরদেহ ফেরত দেওয়ায় পর ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। 

নিহত মেজবাহ উদ্দিন পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে।

গত ১৩ নভেম্বর উপজেলার বাঁশপদুয়া গ্রামে সীমান্তবর্তী এলাকায় ধান কাটতে গেলে বিএসএফ মেজবাহ উদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়। তিন দিন পর স্থানীয়রা তার মরদেহ ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের একশ গজ ভেতরে পড়ে থাকতে দেখে বিজিবিকে খবর দিলে ১৬ নভেম্বর রাত ৩টায় বিজিবি-বিএসএফের বৈঠক শেষে মেজবাহ উদ্দিনের মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ।

১৬ দিন পর তার মরদেহ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফেরত দেয় বিএসএফ। বিলোনিয়া স্থলবন্দরের চেকপোস্ট দিয়ে বিএসএফ তার মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় দুই দেশের সীমান্তবর্তী থানা পুলিশ উপস্থিত ছিল।

আরএআর