ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে ৪ স্কুলছাত্রের ডিজিটাল রেল ক্রসিং আবিষ্কার
ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে চার বন্ধু মিলে আবিষ্কার করেছেন ডিজিটাল রেল ক্রসিং। ট্রেন আসার আগে রেল ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার সয়ংক্রিয়ভাবে পড়ে যাবে প্রয়োজন হবে না গেটম্যানের। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে যশোর সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় এ আবিষ্কারটি প্রদর্শনী করে চার স্কুলছাত্র।
সাজিন আহম্মেদ জয়, এম রোকনুজ্জামান, তাহমিদ মৃধা এটি আবিষ্কার করেছেন। তারা সদর উপজেলার রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির দশম শ্রেণি ছাত্র। ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে তাদের তৈরিকৃত প্রজেক্টটি।
বিজ্ঞাপন
প্রজেক্টের দলনেতা সাজিন আহম্মেদ জয় জানান, বিদ্যালয়ের পাশে একটি রেল ক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা দেখে রেল দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের উদ্দ্যোগ নিয়েছেন চার বন্ধু। তারাই প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক কিট সংগ্রহ করেছে।
প্রজেক্টিতে ব্যবহার করা হয়েছে, আরডিনো, আল্ট্রাসোনিক সেন্সর, জাম্পার ওয়্যার, ব্রেড বোর্ড, সার্বো মোটর, সর্বোপরি বিদ্যুৎ সংযোগ। প্রজেক্টটি তৈরি করতে শিক্ষার্থীদের খরচ হয়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা।
প্রজেক্টিতে দেখা যায়, রেল ক্রসিংয়ের কিছু দূরে লাগানো হয়েছে আল্ট্রাসোনিক সেন্সর। যার ফলে ট্রেনে আসার উপস্থিতি টের পেয়ে সংক্রিয় মোটরের মাধ্যমে রেল ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার পড়ে যাচ্ছে। আবার ট্রেন চলে গেলে পুনরায় ব্যারিয়ারটি উঠে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় ট্রেন আসার সংকেত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে সাংকেতিক বাতি। আর এ প্রযুক্তিটি সঞ্চালিত হচ্ছে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক উপায়ে। ফলে প্রয়োজন হচ্ছে না গেটম্যানের।
রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির প্রধান শিক্ষক বিএম জহুরুল পারভেজ বলেন, আমার স্কুলের পাশে একটি রেল ক্রসিং রয়েছে। সেখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়টি আমার বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নজরে এসেছে এবং তারা একটা উদ্দ্যোগ নেয় যে এবারের ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে নতুন কোনো প্রজেক্ট আবিস্কার করবে।
তিনি আরও বলেন, তারা বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক কিট সংগ্রহ করে এ ডিজিটাল রেল ক্রসিংটির আবিস্কার করেছে। সরকার যদি এটি উদ্দ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে ট্রেন দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।
যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির ডিজিটাল রেল ক্রসিং প্রজেক্টটা প্রথম স্থান অর্জন করেছে। শিক্ষার্থীদের আবিষ্কৃত এ প্রজেক্টটি যদি সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে জনসাধারণের জন্য অনেক নিরাপদ হবে। রেল দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে যাবে বলে মনে করছি।
ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের আবিষ্কৃত এ প্রজেক্টটি যাতে দেশের প্রতিটি রেল ক্রসিংয়ে বাস্তবায়ন করা যায় এজন্য সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বান সকলের।
এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে