‘আমি পঙ্গু-শরীরে রক্ত নাই। ভিক্ষা কইরা ১০০-১৫০ টাকা পাই। সারারাত না খেয়ে থাকি। আমার স্বামী-ছেলে নাই। মেয়ে একটা আছে তারে বরিশাল বিয়ে দিয়েছি কিন্তু কোনো খোঁজ খবর নাই।’ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ‘অটোরিকশা’ পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই কথাগুলোই বলছিলেন নোয়াখালী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুরের রানী বেগম (৫৫)। 

বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের মুজিব চত্বরে ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের’ আওতায় চার ভিক্ষুককে অটোরিকশা হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। 

ভিক্ষা না করার শপথ নিয়ে ভিক্ষুক রানী বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে অটোরিকশা উপহার দিয়েছেন। আমি আর ভিক্ষা করব না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করব।

অটোরিকশা উপহার পাওয়া নোয়াখালী পৌরসভার ফকিরপুর এলাকার ভিক্ষুক রৌশন আরা বেগম (৬১) বলেন, আমি অসুস্থ। ভিক্ষাও পাই না। অটোরিকশা পেয়ে আমার খুব খুশি লাগছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

অটোরিকশা হস্তান্তর করেছেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান

আফিয়া খাতুন (৬০) নামের আরেক ভিক্ষুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুব কষ্টে দিন যায়। মানুষ ভিক্ষা দেয় না। ছেলে-মেয়ে খবর নেয় না। তাই বাধ্য হয়ে হাত পাতি। এখন ডিসি স্যার গাড়ি দিসে। এটার ভাড়া দিয়ে ওষুধ খাইতে পারুম। আমি ভিক্ষুক নই, এখন থেকে রিকশার মালিক।

এ সময় জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, নারীরা শেষ বয়সে বোঝা হয়ে পড়েন। কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায় না। ছেলে-মেয়ে সন্তানরা খোঁজ খবর নেয় না। তাই আমরা ভিক্ষুক নারীদের পুনর্বাসন করছি। তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। এটাই বড় আনন্দের বিষয়।

দেওয়ান মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন করা বাংলাদেশ সরকার প্রধান শেখ হাসিনার অঙ্গীকার। তিনি নানান প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও আশ্রয়হীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন। আশাকরি আমরা দ্রুত নোয়াখালীকে ভিক্ষুক মুক্ত করতে পারব।
 
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীন, জেলা সমাজসেবার সহকারি পরিচালক আবুল কাশেম, শহর সমাজসেবা অফিসার মো. আব্দুল হামিদ, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এইচ তাসফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

হাসিব আল আমিন/আরকে