রংপুরে আইনজীবী আসাদুল হক (৬০) হত্যা মামলায় দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মোর্শেদা বেগম নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক হাসান মাহমুদুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রংপুর মহানগরীর তাজহাট এলাকার ধর্মদাস বারো আউলিয়া গ্রামের মৃত জাফর ড্রাইভারের ছেলে রতন মিয়া (৩২) এবং খোর্দ্দ তামপাট আদর্শপাড়া এলাকার মনির মিস্ত্রীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৬)।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ছুরিকাঘাতে নিহত আসাদুল হক জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ছিলেন। তিনি রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক এপিপি ছিলেন। আইনজীবী আসাদুল হকের সংসারে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তার বড় মেয়ে আশা হক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতিতে ছোট মেয়ে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী আরফিন নাহার অংকনকে নিয়ে তার স্ত্রী নিজ গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ছড়ান এলাকায় অবস্থান করছিলেন। আর ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকার ওই বাড়িতে আসাদুল হক একা থাকতেন।

ঘটনার দিন ২০২০ সালের ৫ জুন শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকার ওই বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে আইনজীবী আসাদুল হকের হাতে ধরা পড়েন আসামি রতন মিয়া। এ সময় তার এক সহযোগী পালিয়ে যান। এ সময় আসাদুল হকের গলায় এবং পেটে ছুরিকাঘাত করে দেয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা রতন মিয়াকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে তাজহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই আইনজীবীর মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নিহত আসাদুল হকের মেয়ে আরফিন নাহার অংকন বাদী হয়ে ঘটনার দিনই রতন মিয়া ও সাইফুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তে মোর্শেদা বেগমের নাম ওঠে আসে। মোর্শেদা বেগম মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রতন মিয়ার মা।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মালেক এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। আশা করি উচ্চ আদালতেও এই রায় বহাল থাকবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি