বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ২ কর্মীর মৃত্যু, হামলায় আহত ৫ শতাধিক
বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে দুই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫শ নেতাকর্মী। রোববার (৬ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এসব তথ্য জানান।
মৃত একজন বরগুনা সদর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের বিএনপি কর্মী সগির খান ও অন্যজন বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক দলের নেতা মিরাজ বয়াতি। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন সিকদার ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সগির খান বরগুনা থেকে ট্রলারযোগে বরিশাল আসতে গিয়ে দুটি ট্রলারের চাপায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মারা যান। আর মিরাজ বয়াতি মিছিল করে দুপুরে সমাবেশের মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ডা. জাহিদ বলেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। তারা ইশরাকের বহরে থাকা ৭টি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অথচ ইশরাক হোসেনসহ বিএনপির ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ ছাড়া সমাবেশে আসার পথে গৌরনদী উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়ার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। সমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদকসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বরগুনার আমতলী উপজেলার বিএনপির জালাল ফকিরের নেতৃত্বে সমাবেশে আসার পথে গাড়িবহরে বাধা দেওয়াসহ গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে তাদের ওপর বাকেরগঞ্জ যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে বিএনপির ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া ভোলার চরফ্যাশনে যুবদলের এক কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
গণসমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে ভোলা জেলায় রাত ১১টার দিকে লঞ্চঘাটে যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী বিএনপিকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়াও পটুয়াখালীতে সমাবেশের দুই দিন আগে জেলা বিএনপির অফিস ও কলাপাড়ায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর করা হয়। পটুয়াখালী সদরে প্রশাসন মাইকিং করে সকল নৌযান ও যানবাহন বরিশালে না যেতে হুমকি দেয়। এমনকি পটুয়াখালী ও দুমকীতে প্রশাসন ভাড়া করা ট্রলার আটকে দেয়।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান খান মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বরিশালে আসার পথে পটুয়াখালীতে হামলা করে তাকে আহত করে। তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, শত বাধা উপেক্ষা করে বরিশালের গণসমাবেশে সব শ্রেণিপেশার লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। গণসমাবেশ মহাসমাবেশে পরিণত হয়েছে দাবি করে এজন্য তিনি বরিশালের আপামর জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান। গণসমাবশে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের হামলায় বিএনপির ৫ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এবং এর নিন্দা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী সোহেল, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহবুবুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেজবাউদ্দিন ফরহাদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে/এমজেইউ