বরিশালে বিএনপির সমাবেশ
সমাবেশস্থলেই রাত কাটছে হাজারো নেতা-কর্মীর
বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশস্থলে দুই দিন আগে থেকে জড়ো হওয়া নেতা-কর্মীর অধিকাংশই মাঠে রাত কাটাচ্ছেন। সামিয়ানা আর ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে মাঠেই রাত পার করছেন তারা।
গণসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কয়েক হাজার নেতাকর্মী দুই রাত মাঠে কাটানোর প্রস্তুতি নিয়ে তাঁবু টাঙিয়েছেন। কেউ কেউ মাঠেই বিশেষ ব্যবস্থায় রান্নার ব্যবস্থা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাতে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে দেখা গেছে, নেতা-কর্মীরা কেউ গান গেয়ে, মিছিলের স্লোগান দিয়ে জমায়েত জমজমাট করে রেখেছেন।
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চর মাইনকা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন সিকদার বলেন, অসম্ভব দুর্ভোগ-দুর্দশা সহ্য করে সমাবেশস্থলে এসেছি। সরকার সব বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা ট্রলার ভাড়া করে কয়েক হাজার মানুষ এসেছি। এতো কষ্ট করছি শুধু ভোটাধিকার ফেরত পাওয়ার জন্য। ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারি না। অথচ দেশ স্বাধীন হয়েছিল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েই।
৭ নং ওয়ার্ড যুবদলের সম্পাদক আব্দুর রহিম সরদার বলেন, কষ্ট করছি আরও করব। কিন্তু ভোট না দিয়ে মেম্বার-চেয়ারম্যান-এমপি নির্বাচনের খেলা আর দেখতে চাই না।
গৌরনদী উপজেলা থেকে আসা যুবদল কর্মী আরাফাত বলেন, আওয়ামী লীগের অত্যাচারে গৌরনদী-আগৈলঝাড়ার মানুষ অতিষ্ঠ। আমরা চাই এই অত্যাচার থেকে মুক্তি। তাতে যত কষ্ট দরকার হয় করব।
পাথরঘাটার বিএনপি কর্মী সাইদুল ইসলাম বলেন, সরকারের নির্দেশে আমাদের সমাবেশস্থলটি বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে, লাভ হয়নি। আমরা চলে এসেছি শুধু ভোটাধিকার ফেরত পেতে চাই। বিনাভোটের জনপ্রতিনিধি আর দেখতে চাই না।
সমাবেশে কিছুক্ষণ পর পর কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় শীর্ষ নেতারা আসেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। শুধু পুরুষ নেতাকর্মী নয়, নারী নেতাকর্মীরাও রয়েছেন মাঠে।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। সময়ের ব্যাপারমাত্র। যেকোনো মুহূর্তে এই সরকারের পতন ঘটবে। বাংলাদেশের জনগণ হাসিনা সরকারের পতন চায়, নিজের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন মানুষ দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে দেখছে। এজন্যই সমাবেশের দুই দিন আগেই সমাবেশস্থল পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, মাঠে মাঠে নেতা-কর্মীরা কষ্ট করে সমাবেশ সফল করতে অপেক্ষা করছেন। এতে এটাই প্রমাণ হয় দেশের মানুষ আর এ সরকারকে দেখতে চায় না। দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষের ঢল প্রমাণ করে জনগণের চাহিদা এখন বিএনপির সরকার।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসকেডি