বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের জনগণকে ধৈর্য ধরতে বলছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমাদের বলছেন অল্প খেতে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হতে। বলছেন দিনে বিদ্যুৎ থাকবে না, রাতে ফ্যান চালাবেন না। এসব আমাদের বলছেন, আর তারা খাচ্ছেন চিতল মাছ! 

শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রংপুরের ঐতিহাসিক কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যের এক পর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি আপনারা ঘন ঘন বিদেশ যাচ্ছেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে বিদ্যুৎ চালিয়ে আরাম-আয়েশ করছেন। আর দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। যারা কৃষি কাজ করছেন তারা সেচের পানি পাচ্ছেন না।

ফখরুল বলেন, ১০ টাকা কেজির চাল খাওয়াতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। এখন ৯০ টাকায় চাল খাওয়াচ্ছে। ডাল, ডিম, চিনিসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। শাকসবজি কিনতে গিয়েও মানুষ বাজার থেকে ফিরে আসছেন। আগে যে মানুষ একটু ভালোমন্দ খেত, এখন সেটাও শেষ। মানুষ কী খেয়ে থাকবে?

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছরে এই আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের যত অর্জন ছিল, যত স্বপ্ন ছিল সমস্ত কিছুকে ধ্বংস করে দিয়েছে, নষ্ট করে দিয়েছে। যেদিকে তাকাবেন খালি চুরি চুরি আর চুরি। এখন বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ সব ভাতাতে ভাগ নেয় আওয়ামী লীগ। রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট তৈরি করতেও তারা এখন টাকা চুরি করে। এমনকি গরিবের আশ্রয়ণ প্রকল্পেও চুরি করছে। তারা সর্বক্ষেত্রে লুট করছে। সব খেয়ে ফেলছে। আর কিছু বাকি রাখেনি। সরকার এখন ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’র মতো সব খেয়ে ফেলছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সমাবেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সমাবেশ। একটা মানুষ, একটা দল গত ১৫ বছর ধরে আমাদের দমন-পীড়ন করছে। সমস্ত দেশটাকে তারা কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছে। এখন বাংলাদেশকে খাওয়ার পাঁয়তারা করছে।

তিনি বলেন, এই সমাবেশের লক্ষ্য একটাই, হাসিনা কবে যাবে? এই সরকার কবে যাবে? দাবি একটাই, এই সরকারের পদত্যাগ।

নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলের নেতা-কর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশের সব বিভাগে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার পর আজ রংপুরে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

দুপুর ২টায় বিভাগীয় এই গণসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের সোয়া দুই ঘণ্টা আগে দুপুর পৌনে ১২টায় সমাবেশ শুরু হয়ে যায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর