সড়ক দুর্ঘটনার আইনে মৃত্যুদণ্ড রাখার বিধান হয়নি : ইলিয়াস কাঞ্চন
নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, আমার নামে যানবাহন শ্রমিক, চালক ও সংশ্লিষ্টদের কাছে ভুল শোনানো হচ্ছে। কোনো ড্রাইবারের কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় কেহ মারা গেলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক আমি নাকি এমন কথা বলেছি। আর সড়ক দুর্ঘটনার আইনে মৃত্যুদণ্ড রাখার বিধান হয়নি। তাহলে আমি কেন এমন কথা বলব চালকের মৃত্যুদণ্ড চাই। আমি বলেছি কেউ যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায় তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। যেমন একজন ব্যক্তিকে অবৈধ অস্ত্র রাখার কারণে পুলিশ আটক করে। তাহলে কেন লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালকে পুলিশ আটক করবে না। আমি বলেছি এটি। কিন্তু মানুষের কাছে ভুল উপস্থাপন করা হয়েছে আমার নামে।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুরে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠনের আয়োজনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে যানবাহনের শ্রমিক, চালক ও মালিকদের নিয়ে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে গাড়ির লাইসেন্স পেতে সহজ। কিন্তু বিদেশে গাড়ির লাইসেন্স পাওয়া অনেক কঠিন। বছরে আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ২৫ হাজার মানুষ। আর আমেরিকায় মারা যায় ২০০০ মানুষ। আমি কারণ হিসেবে খুঁজতে গিয়ে দেখলাম আমাদের দেশে আইন মানার প্রবণতা নেই। আল্লাহ দুনিয়াতে মানুষ পাঠিয়েছেন আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য। কিন্তু আমরা মানুষ হিসেবে আমাদের বিবেককে কাজে লাগাইনি। এ সমাবেশে যানবাহনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শ্রমিক, চালক, মালিক ও যাত্রী সাধারণ এখানে আছেন। আমাদের সবারই তো নিজ নিজ দায়িত্বে বিভিন্ন কাজ করি। তাহলে সড়কে চলতে গিয়ে কেন সড়কের আইন মানব না। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা আইন মানি না। আইন হলো নিয়ম। সড়কেরও তো আইন আছে। কিন্তু আইন কি জিনিস সেটাই আমরা জানি না। আসুন আমরা আইন মেনে সড়কে চলি। আমরা সবাই আইন মেনে চললে সড়ক নিরাপদ হবে। নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।
নিসচার চাঁদপুর জেলা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক এম এ লতিফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ রাসেলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও বিশিষ্ট লেখক হোসেন আব্দুল মান্নান বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন জাতীয় ব্যক্তিত্ব। শত শত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি একটি মাত্র ইস্যুতে রাস্তায় নেমেছেন। তাও আবার নিজের খেয়ে, নিজের পড়ে। মানুষকে সচেতন করতে নিরলস কাজ করেছেন। আজ ইলিয়াস কাঞ্চনের কারণে সড়কে আইন মেনে চলার প্রবণতা বেড়েছে। এখন পথচারী, যাত্রী ও চালকগণও অনেকটা সচেতন। ইলিয়াস কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী হারিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন শুরু করেছেন। সেই আন্দোলন এখন জনমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এ আন্দোলনের দাবি নিয়ে মাঠে কাজ করতে গিয়ে তিনিও সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছেন। তারপরও থেমে যাননি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, নিসচার উপদেষ্টা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, নিসচার কেন্দ্রীয় মহাসচিব লিটন এরশাদ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন প্রমুখ।
আনোয়ারুল/এমএএস