সমাধান দিলো পুলিশ, হরিজন সেই কিশোরকে মিষ্টি খাওয়ানো হলো
রংপুর নগরীতে হোটেলে নাস্তা খেতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হওয়া স্কুলপড়ুয়া হরিজন কিশোর জীবন বাসফোরকে (১৬) মিষ্টি খাইয়ে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে মৌবন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে মৌবন হোটেলের ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে মিষ্টি খাইয়ে হরিজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্ট ঘটনার সমাধান করেন।
বিজ্ঞাপন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) আরিফুজ্জামান, কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মাহফুজার রহমান, হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের নেতা রাজা বাসফোর, রাজু বাসফোর, সাজু বাসফোর, সুরেশ বাসফোরসহ অন্যরা।
এর আগে পুলিশ বিরোধ মীমাংসার জন্য কোতোয়ালি থানায় হরিজন সম্প্রদায়ের নেতা ও মৌবন হোটেল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। সভায় দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেন।
হরিজন নেতা সুরেশ বাসফোর বলেন, মীমাংসার পর মৌবন হোটেলে গিয়ে আমরা এক সঙ্গে মিষ্টি খেয়েছি। আগামীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে। আমাদের পাশে যারা দাঁড়িয়েছিলেন আমি সকলকেই ধন্যবাদ জানাই।
বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে কোনো মানুষের প্রতি অন্যায় হলে সকলে সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এই ঐক্যবদ্ধতার ফল স্বরুপ আজ আমাদের অধিকার আমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো।
হোটেল ম্যানেজার আরিফুজ্জামান বলেন, গত শনিবার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে মালিকপক্ষের কেউ জড়িত ছিল না। কোনো কাস্টমার হয়তো প্যাডের পাতায় ‘এই হোটেলে খাওয়া নিষেধ সুইপারের’ লিখে দিয়েছিল। প্রশাসনের মাধ্যমে হরিজনদের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষ বসে আলোচনার মাধ্যমে এই বিরোধ মিটে গেছে। আমি নিজেই জীবন বাসফোরকে মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছি।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান বলেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ ও হরিজন সম্প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে বিরোধটি মীমাংসা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১ অক্টোবর) রংপুর নগরীর কাচারী বাজারস্থ মৌবন হোটেল ও রেস্টুরেন্ট থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের স্কুলপড়ুয়া জীবন বাসফোর (১৬) নামের এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠে হোটেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে হোটেলের প্যাডে ‘এই হোটেলে খাওয়া নিষেধ সুইপারের’ লিখে ওই হোটেলে হরিজনদের খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ফুসে উঠে হরিজন সম্প্রদায় ও সচেতন মহল।
এ ধরনের বৈষম্য বিরোধ দ্রুত নিরসনসহ ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দেন হরিজন অধিকার সংগঠন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস