এখন পর্যন্ত মির্জা ফখরুল পঞ্চগড়ে আসেননি, আমরা এসেছি : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক প্রধানমন্ত্রী, মানবতার মা। তিনি পঞ্চগড়ের নৌকাডুবির ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে গভীর শোক প্রকাশ করে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
রোববার (০২ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঘটনার দিন জেলা প্রশাসন থেকে মৃতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা, এরপর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নগদ ৫০ হাজার, রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে ৫ হাজার ও রেলমন্ত্রীর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মৃতদের প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হলো। জানি এ টাকায় আপনাদের শোক মুছে দিতে পারব না, কিন্তু পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগ জনমানুষের সরকার। এই দলটি জনগণের কল্যাণ নিয়ে সব সময় চিন্তা করে। যেকোনো দুর্যোগে দলের নেতা-কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। প্রতিবেশী জেলা পঞ্চগড়ে এমন মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনি এখানে আসেননি। এখন আমরা এসেছি, কাল হয়তো তিনি আসবেন। বিএনপি মূলত শীতকালীন অতিথি পাখির মতো, তারা নির্বাচনের সময় আসবেন, আর নির্বাচনের পর আর জনগণের পাশে দেখা যায় না।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম সুজন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, পঞ্চগড় সদর জেলা উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, বোদা পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান সুজা, মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো রেজাউল করিম শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, নৌকাডুবির ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি কক্সবাজার থেকে এলাকায় ছুটে আসি। এখন পর্যন্ত এলাকায় অবস্থান করছি। সবার খোঁজখবর রাখছি। সহায়তার ব্যবস্থা করেছি। এ অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবি, মাড়েয়া আউলিয়া ঘাটে একটি ব্রিজের। আমি এমপি হওয়ার পর কথা দিয়েছিলাম এখানে সেতু হবে। ইতোমধ্যে এখানে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব একনেকে পাস হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে এখানে ওয়াই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন ২৫ জন, দ্বিতীয় দিন ২৬ জন, তৃতীয় দিন ১৭ ও চতুর্থ দিন একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নৌকাডুবিতে মৃত ৬৯ জনের মধ্যে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৪৫ জন, দেবীগঞ্জের ১৮ জন, আটোয়ারীর ২ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ জন ও পঞ্চগড় সদরের ১ জন রয়েছেন। মৃত ৬৯ জনের মধ্যে নারী ৩০ জন এবং পুরুষ ১৮ জন। বাকি ২১ জন শিশু।
এসকে দোয়েল/আরএআর