পদ্মা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছে গোপালগঞ্জের কৃষকরা। তারা নিজেদের ক্ষেতে উৎপাদিত সবজি এখন জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ ১৩ জেলার বড় বড় পাইকারি বাজারে পৌঁছাতে পারছে। এতে জেলার প্রায় ১০ হাজার কৃষক পাচ্ছেন তাদের উৎপাদিত সবজির ন্যায্যমূল্য।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার অধিকাংশ কৃষক বারোমাসি মৌসুমি সবজি চাষ করে থাকেন। প্রতি বছর এ জেলায় প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় জেলার কৃষকরা এ বছর সবজি চাষে বিনিয়োগও বাড়িয়েছেন। ফলনও হয়েছে ভালো। 

আগে এ জেলায় উৎপাদিত সবজি সংরক্ষণের জন্য কোনো হিমাগার না থাকায় পঁচে যাওয়ার ভয়ে পানির দরে স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিতে হতো। এমনকি ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে সবজি পচে যেতো। এতে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতো জেলার সবজি চাষিরা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দ্রুত ও সহজে রাজধানীসহ সমগ্র দেশে এ জেলার সবজি পৌঁছে যাচ্ছে।

টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর এলাকায় দেখা যায়, দুপুর হলেই চাষিরা তাদের জমি থেকে সবজি তুলে এনে রাস্তাার পাশে স্তূপ করে রেখেছেন। সেখান থেকে ব্যাপারীরা পাইকারি দরে কিনে ট্রাকযোগে পদ্মা সেতু হয়ে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

স্থানীয় এক কৃষক বলেন, আগে স্থানীয় বাজারে পানির দরে বিক্রি করতে হতো। তখন আমাদের সার, তেলের টাকা উঠতো না। এখন ঢাকার বাজার যাচাই করে তারপর বিক্রি করি। এখন প্রতি কৃষক তার উৎপাদিত সবজির ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে।

আরেক সবজি ব্যাপারী বলেন, আগে যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার কারণে এখান থেকে সবজি কিনে ঢাকায় পাঠানো সম্ভব ছিল না। পদ্মা সেতুর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় আমরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে পারছি। এতে কৃষকরা যেমন তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে তেমনি আমরাও ব্যবসা করে বেঁচে আছি।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, এ জেলায় উৎপাদিত সবজি সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। এটা কৃষকদের জন্য বড় খুশির সংবাদ। আমি এ জেলার কৃষকদের বেশি বেশি সবজি উৎপাদনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

এসপি