ছেলে-নাতি-পুত্রবধূ তিনজন একসঙ্গে নতুন কাপড়-চোপড় পরে বের হয়েছিল বাড়ি থেকে। বের হওয়ার সময় সবার চোখে মুখে ছিল মহালয়া দেখতে যাওয়ার আনন্দ। নৌকাডুবির পর বাড়িতে ফিরেছে কেবল নাতি। পুত্রবধূর লাশ এসেছে। তবে এখনো পাওয়া যায়নি ছেলের লাশ। ছেলের লাশের অপেক্ষায় করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে অপেক্ষা করছেন বাবা মদন কুমার। 

মদন কুমারের বয়স ৮০ পেরিয়েছে। শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ। তার ওপর জন্ম থেকেই ঠোঁট কাটা। আগে কিছুটা কথা বলতে পারলেও এখন শুধু কান্না করছেন। 

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের পাঁচপীর গ্রামের বাসিন্দা মদন কুমার। করতোয়া নদীতে ভয়াবহ নৌকাডুবিতে নাতিকে জীবিত আর পুত্রবধূর লাশ পেলেও এখনো পাননি ছেলে ভুপেনের (৪০) লাশ। 

মদন কুমারের সঙ্গে আসা তার পুত্রবধূর ভাই প্রফুল্ল বলেন, ওরা তিনজন মহালয়া দেখতে যায়। তারপর তো নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাডুবিতে আমার ভাগনেকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল আমার বোনের লাশ বীরগঞ্জে পাওয়া যায়। কিন্তু এখনো আমরা বোন জামাইয়ের লাশ খুঁজে পাইনি। তার লাশের জন্য আমি আর আমার বোনের শ্বশুর ঘাটে অপেক্ষা করছি। যেভাবে হোক আমার বোন জামাইয়ের লাশটা খুঁজে দিন।

ভয়াবহ নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত ৬৪ জনের লাশ উদ্ধার করার সত্যতা নিশ্চিত করে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৬১ জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তিনজনের লাশ শনাক্ত হয়নি। যেহেতু নৌকায় যাত্রীর সংখ্যা নিশ্চিত নয়, তাই আজও আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। 

এসপি