মাকে রাস্তায় ফেলে গেলেন সন্তানরা
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে রাস্তায় ফেলে রেখে গেছেন তার সন্তানরা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দায়িত্ব নিয়ে ওই মাকে বন্দর উপজেলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে যাওয়া ওই মায়ের স্মরণশক্তি কমে যাওয়ায় তার নাম পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টায় তাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম কুদরত-এ-খুদার নির্দেশে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ফয়সাল কবির একরামপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
বন্দরের একরামপুর এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই নারীকে তার স্বজনেরা বন্দরের একরামপুর এলাকায় ফেলে যায়। এরপর থেকেই রাস্তায় ঠাঁই হয় ওই মায়ের। স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে রাস্তার পাশে ফুটপাতে একটি কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে তার থাকার ব্যবস্থা করেছেন। গত পনের দিন যাবৎ তার খাবারের ব্যবস্থা করেছেন তারা। অসুস্থ মা তার নাম পরিচয় বলতে পারছেন না।
একরামপুর এলাকার বাদল মিয়া নামের এক দোকানি ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমে তিনি খোলা আকাশের নিচে পড়েছিলেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে একরামপুর মোড়ের কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচে এনে রাখা হয়। একটি ত্রিপল কিনে ওই জায়গাতেই থাকার ব্যবস্থা করি। আজ উপজেলা প্রশাসনের বড় কর্তারা এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তবে তার কথা শুনে মনে হচ্ছে তার বাড়ি নোয়াখালী বা আশেপাশের কোথাও হতে পারে।
এদিকে ওই বৃদ্ধ মায়ের সেবা করা স্থানীয় আরেক নারী বলেন, আমি তার কয়েক দিন ধরে সেবা করেছি। স্থানীয়রা আমাকে সহযোগিতা করেছে, তাদের সহায়তায় তার খাবারের ব্যবস্থা হয়েছে। আজ শুনেছি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই মানবিক, সন্তানরা যেন তাদের ভুল উপলব্ধি করে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়।
বন্দর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ফয়সাল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর মাধমে খবরটি জানতে পেরে বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশক্রমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ওই মায়ের বয়সের ভারে স্মরণ শক্তি লোপ পেয়েছে। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন ও অসম্পূর্ণ। তাই তার পরিচয় জানা যায়নি। যারাই এই গর্হিত কাজ করেছেন আমি আশা করি তারা অনুতপ্ত হয়ে মাকে ঘরে ফিরিয়ে নিবেন। এছাড়াও যদি কেউ তাকে চিনে থাকেন তবে বন্দর উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বৃদ্ধ মায়ের শারীরিক অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো। তিনি স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছেন। আপাতত তাকে এখানেই রাখা হবে। যদি পরিবার এগিয়ে আসে তবে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আবির শিকদার/এমএএস