ইউএনও সমর কুমার পাল

বগুড়ায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমর কুমার পালের বিরুদ্ধে আলমগীর হোসেন নামে এক নৈশপ্রহরীকে বেধরক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায়  জেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এক সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। 

বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক জানান, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নৈশপ্রহরীকে মারধরের ঘটনা জানার পর মৌখিকভাবে তদন্তের কথা বলা হয়। পরে শুক্রবার সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালাহ্উদ্দিন আহমেদকে তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তাকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালাহ্উদ্দিন আহমেদ বলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও লিখিত কোনো নির্দেশনা আসেনি। লিখিত আসার পরই যথাযথ নিয়ম মেনে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলমগীর হোসেন নামে ওই নৈশপ্রহরীকে পিটিয়ে গুরুতর জখমের অভিযোগ ওঠে ইউএনও সমর কুমার পালের বিরুদ্ধে। মারপিটের পর নৈশপ্রহরীকে উপজেলা পরিষদের ফেলে রাখা হয়। তবে ইউএনওর দাবি, তাকে কোনো মারপিট করা হয়নি। সে সিমপ্যাথি নেওয়ার জন্য এমন অজুহাত দেখাচ্ছে।

ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন সদর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নৈশপ্রহরী। তিনি সিরাজগঞ্জ সদরের মেহের আলীর ছেলে। বর্তমানে চাকরির সুবাদে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীদের কোয়ার্টারে থাকেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলমগীর বলেন, ‘আমার বউ বগুড়ায় আমার সঙ্গে থাকতে চায়। এ নিয়ে ১৫ দিন আগেও আমার উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে কমপ্লেইন দিয়েছে। এইটা নিয়ে স্যার আমাকে তিন বার শোকজ করেছেন। আমি জবাব দিছি। বৃহস্পতিবার ইউএনও স্যারের কাছে বউ গিয়ে আবার অভিযোগ দেয়। এই অভিযোগে ইউএনও স্যার আমাকে তার অফিসে ডাকে। আমি গেলে আনসার সদস্যরা আমাকে ধরে তার (ইউএনও) কাছে নিয়ে আসেন। আর মোটা মোটা লাঠিও আনে তারা। ইউএনও স্যার এগিয়ে এসে আমাকে একটু অন্ধকারের দিকে নিয়ে যান। সেখানে নিয়েই আমাকে লাঠি দিয়ে মার শুরু করেন। ওই সময় তার দেহরক্ষী দুই আনসার সদস্য আমাকে ধরে ফেলে রেখে যায়। আমি অনেক কাকুতি মিনতি করেছি, আমাকে যেন না মারে। বলেছি- স্যার আমি আপনার স্টাফ। কিন্তু স্যার আমাকে মারতেই থাকে। একবার অচেতনও হয়ে পড়ি। তারপরও মারছে আমাকে।’

হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালে আলমগীর তার এক স্বজনের সিরাজগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। 

নৈশপ্রহরী আলমগীরের জামাতা মাসুদ রানা বলেন, আমার শ্বশুরের মায়ের বয়স অনেক বেশি। তিনি একটু অসুস্থও। এ জন্য শ্বশুরের বড় ভাই আমাদের গ্রামের বাড়িতে চলে আসতে বলেছেন। প্রয়োজনে এখানেই তার চিকিৎসা করা হবে। আর আমার শ্বশুর সময় সুযোগ বুঝে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।।

আরএআর