যানজটে স্থবির ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক
গত তিন দিনের বৃষ্টিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় গাজীপুরের চেরাগআলী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে বিকল্প সড়কসহ হেঁটে চলাচল করছেন অনেকে।
পুলিশ, মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী, চালকরা জানান, গত তিন দিনের বৃষ্টিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে বড় বড় গর্তসহ খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এতে যানবাহনে ধীরগতি তৈরি হয়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। টঙ্গীর আব্দুল্লাহপুর সেতুতে উঠতে বড় বড় একাধিক গর্ত তৈরি হয়েছে। ওই গর্তে যানবাহন আটকে বিকল হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজে মহাসড়কে বসানো যন্ত্রপাতির কারণে মহাসড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে এক লেনে ঢাকায় গাড়ি প্রবেশ করছে ও ঢাকা থেকে এক লেনে গাড়িগুলো বের হচ্ছে। এছাড়াও কলেজ গেট থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত মহাসড়ক জুড়েই খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। গর্তে আটকে যাচ্ছে বাস, ট্রাক, পিকআপসহ অন্যান্য যানবাহন। এতে স্থবির হয়ে পড়ছে মহাসড়ক।
বিজ্ঞাপন
গাজীপুরের শ্রীপুরের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছেন। তিনি জানান, সকাল ৬টায় বাসযোগে গাজীপুর চৌরাস্তা পাড় হয়েছেন। তারপর দীর্ঘ তিন ঘণ্টায়ও টঙ্গী পৌঁছাতে পারেননি তিনি। পরে কিছু পথ হেঁটে বিকল্প যান ও বিকল্প পথ ধরে ঢাকায় যান।
গাজীপুরের সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার অপর ব্যবসায়ী সোহেল রানা জানান, জরুরিকাজে খুব ভোরে রওনা হয়ে বেলা ১১টায়ও আব্দুল্লাহপুর পার হতে পারেননি। পরে ঢাকায় না গিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন।
সপ্তাহে প্রতি বুধবার উত্তরা থেকে গিয়ে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তাসহ আশপাশ এলাকায় রোগী দেখেন চিকিৎসক আতিউর রহমান। তিনি বলেন, সকাল ৯টায় চেম্বারে থাকার কথা। যানজটের চিন্তা মাথায় রেখে সাড়ে ৬টায় উত্তরার বাসা থেকে নিজস্ব গাড়ি যোগে বের হলেও যানজটের কারণে সকাল সাড়ে ১০টায় চেম্বারে পৌঁছাতে হয়েছে।
ময়মনসিংহগামী বাসের চালক শওকত হোসেন জানান, আগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় ঢাকার মহাখালী থেকে ময়মনসিংহ চলাচল করা যেত। এখন যানজটের কারণে কয়েকগুণ সময় বেশি লাগছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সকালে চেরাগআলী থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে। বৃষ্টিতে তৈরি হওয়া মহাসড়কের খানাখন্দ বালুসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে।
বিআরটি প্রকল্পের এলিভেটেড অংশের প্রকল্প পরিচালক মহিরুল ইসলাম খানের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে দুপুর ১২টার কিছু সময় পর মহাসড়কের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বের হন। টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে মাঠে থাকার অনুরোধ করেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি জানান, বর্তমানে অস্থায়ী সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা এখনো স্থায়ী রোড করিনি, তাই গাড়িগুলো স্লো হয়ে গেছে। চাইনিজদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শিহাব খান/আরএআর