ছেলের খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা বাবা-মায়ের
নীলফামারীর ডোমারে স্কুলছাত্র আরিফ হত্যার ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন তার বাবা-মা। অন্যদিকে দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে নিহত আরিফের সহপাঠী ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের পর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ডোমার-নীলফামারী সড়ক অবরোধ করে ছাত্র ছাত্রীরা। এ সময় নিহত আরিফের মা তফিনা বেগম ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞাপন
মা তফিনা বেগম বলেন, আমার কোল খালির আজ ২৫ দিন পেরিয়ে গেল। আজও জানতে পারলাম না কে? কেন? আমার সন্তানকে হত্যা করল। আমি আমার সন্তানের হত্যাকারীদের বিচার চাই। যতদিন গ্রেপ্তার হবে না, ততদিন আমরণ অনশন করে যাব।
আরিফের সহপাঠী আকরাম বলে, আরিফ আমাদের খুব ভালো বন্ধু ছিল। সে পড়াশোনার পাশাপাশি বাবা-মাকেও হেল্প করত। কিন্তু আমাদের বন্ধুকে যারা খুন করছে তারা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এ জন্য আমরা রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা আরও আন্দোলন করব।
ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলে, আরিফের মতো ভালো ছেলেকে যদি আজ এভাবে প্রাণ দিতে হয়, তাহলে কাল যে আমি সুমাইয়া ভালো থাকব তার কি নিশ্চয়তা আছে ৷ এত দিন পরও কেন আসামি গ্রেপ্তার হয় না, আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। আমরা আজ সড়ক অবরোধ করেছি। যদি দ্রুত সময় গ্রেপ্তার না হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলন করব।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ডোমার উপজেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব ঢাকা পোস্টকে বলেন, এভাবে হত্যার পর যদি আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা না হয়, তাহলে এভাবে সমাজে অরাজকতার আতুর ঘড় গড়ে উঠবে পাড়া-মহল্লায়। সুশাসনের জন্য নাগরিকের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি সর্ব্বোচ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। আশা করি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পারব।
গত ১৯ আগস্ট বিকেলে বাবার অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. আরিফ হোসেন। নিখোঁজের সাত দিন পর ২৬ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নে মাঝাপাড়া এলাকায় বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি সেচ পাম্পের ঘর থেকে স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আরিফের বড় বোন ঝর্ণা আক্তার কেয়া বাদী হয়ে ডোমার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর