মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। এ সময় ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে আরও দুজন আহত হয়েছেন। পুলিশ নিহত ডাকাতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছে। 

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা-মাওয়া (বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের) কেওয়াটখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ বলছে, নিহত ওই ব্যক্তি ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তার নাম আব্দুল মালেক ওরফে আব্দুল আলীম (২৯)। তিনি পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার হরিনাপাল এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে ঢাকা, গাজীপুর ও পটুয়াখালীতে চারটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। আহত দুজন হলেন- মোহাম্মদ হৃদয় (১৭) ও মোহাম্মদ ইমাম হোসেন (১৮)। হৃদয় ও ইমাম ঢাকার রায়েরবাগ এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কেওয়াটখালী এলাকায় রোববার মধ্যরাত থেকেই খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের ওপর দিয়ে যানবাহন ধীর গতিতে চলছিল। গভীর রাত হওয়ায় ওই এলাকার মহাসড়কটিও সুনশান ছিল। এই সুযোগে ডাকাতদল ছুরি, রামদা, চাপাতি নিয়ে সিএনজি, প্রাইভেটকারে ডাকাতি করছিল। ডাকাতির সময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ আসার খবরে তারা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে ডাকাতদের একজন জ্ঞানহীন অবস্থায় সড়কে পড়েছিল।

ডাকাতির ঘটনায় আহত হৃদয় বলেন, রাত ২টার দিকে আমরা ৮ বন্ধু রাজধানীর রায়েরবাগ থেকে সিএনজিতে করে মাওয়ায় ঘুরতে আসি। রাত ৩টার দিকে বাড়িতে ফিরছিলাম। শ্রীনগরের কেওয়াটখালী এলাকা আসলে ৬-৭ জনের একটি ডাকাত দল পথরোধ করেন। এ সময় তারা মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা সব ছিনিয়ে নেয়। আমাদের মারধরও করেন। এতে আমি ও বন্ধু ইমাম হোসেন আহত হই।

আহত ইমাম হোসেন বলেন, ডাকাতদের সঙ্গে ধারালো অস্ত্র ছিল। তারা আমার হাতের কব্জির মধ্যে কোপ দিতে চায়। আমি হাত সরিয়ে নিলে আমার আঙ্গুলের মধ্যে কোপ লাগে। তারা আমাদের সামনে আরও একটি সিএনজি ও একটি প্রাইভেটকারে ডাকাতি করে। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক ডাকাত মৃত পড়েছিল।

শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ড. মারুফা ইসলাম বলেন, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনজনকে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আনা হয়। শুনেছি এদের মধ্যে দুই তরুণ ডাকাতের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। এদের শরীরে সামান্য কাটাছেঁড়া রয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। সম্ভবত স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, রাত ৩টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। সে সুযোগে ডাকাত চক্র সিএনজি, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন গাড়িতে ডাকাতি করেছিল। আমাদের টহল পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল পালাতে চেষ্টা করে। সে সময় কেওয়াটখালী এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের ডিভাইডারে ডাকাতদের একজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। আমরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে হাসপাতালে আসি। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ব.ম শামীম/এসপি