১০ টাকা কেজির চাল পেতে দিতে হয় ১০০
বরগুনায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল পেতে কার্ড ও ডাটাবেজ তৈরির জন্য সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কষ্ট হলেও চাপে পড়ে ১০০ টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন সুবিধাভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের এক হাজারেরও বেশি সুবিধাভোগীর ১০ টাকা কেজির চাল পেতে কার্ড নবায়ন ও ডাটাবেজের কাজ শুরু হয় গত শনিবার।
বিজ্ঞাপন
সার্ভারে সমস্যা থাকার কারণে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত পর্যন্ত চলে ডাটাবেজ তৈরির কাজ। তবে কার্ড নবায়ন ও ডাটাবেজ তৈরি করতে ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা বনি আমিনকে। ফলে বাধ্য হয়েই ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে সুবিধাভোগীদের।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল নিতে কার্ড নবায়ন ও ডাটাবেজ তৈরি করতে ভিড় করছেন সুবিধাভোগীরা। প্রতিটি কার্ডের জন্য ১০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে তাদের। প্রকাশ্যে এই টাকা নিচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা বনি আমিন।
বদরখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মাজেদা বেগম, রাহেলা, সালেহা বেগমসহ কয়েকজন উপকারভোগী বলেন, ১০ টাকা কেজি চাল পেতে হলে আমাদের ১০০ টাকা দিতে হয়। এখানে আসার আগেই পরিষদ থেকে আমাদের ১০০ টাকা নিয়ে আসার জন্য বলেছে, তাই টাকা নিয়ে এসেছি।
আরও কয়েকজন সুবিধাভোগী বলেন, খবর পেয়ে অনলাইনে কার্ড করতে ইউনিয়ন পরিষদে আসেছি। এখানে প্রতি কার্ডের জন্য ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ, এই বাড়তি টাকা দিতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। এসব কাজ বিনামূলে করার কথা।
এই ১০০ টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে তা জানতে বনি আমিনের অফিসে গেলে তিনি গা ঢাকা দেন। পরে মুঠোফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কার্ড বাবদ কোনো টাকা নিচ্ছি না। এসব মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। আমার লোক আপনাদের সঙ্গে দেখা করবে।
বদরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা বলেন, বিষটি আমি জানি না। কার্ড নবায়ন ও ডাটাবেজ তৈরি করতে কোনো টাকা-পয়সা নেওয়ার নিয়ম নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব, সত্যতা পেলে ওই উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল হাকিম বলেন, কার্ড নবায়ন ও ডাটাবেজ তৈরিতে টাকা নেওয়ার বিধান নেই। কারণ সরকার থেকেই প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কার্ডপ্রতি ১৫ টাকা দেওয়া হয়। এখানে টাকা-পয়সা নেওয়া বেআইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খান নাঈম/আরআই